নিজস্ব প্রতিবেদক
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে কারসাজি করলেই লাইসেন্স বাতিলসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ছাড়পত্র বন্ধ করা হবে জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেছেন, বাজারে কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির ঘাটতি নেই। কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রোববার (২১ জানুয়ারি) অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় জরুরি সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো: আব্দুর রহমান বলেন, এই বসাটা একটি স্বদিচ্ছার প্রকাশ। আপনাদের, আমাদের সবারই মনে রাখতে হবে, শেখ হাসিনা সরকারের একটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার- দেশের মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা এবং যাতে সহজলভ্য হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারসাজিতে কিছু কিছু জিনিসের ব্যত্যয় ঘটেছে, সে ব্যত্যয় যাতে আর না ঘটে সে ব্যাপারে যাতে পদক্ষেপ আমরা নিতে পারি, কি কি পদক্ষেপ নিতে পারি, সে ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, মূল কথা হলো, বাজারে কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির শর্টেজ নেই। কিন্তু কিছু মধ্যস্বত্বভোগী আছে, কিছু মতলববাজি যারা কারসাজি করে তারা আছে। সেই শ্রেণির কৃত্রিম একটি সংকটের কারণে আমরা এ ধরনের একটি বিপদে পড়ি। সুতরাং আপনারা আজ থেকে আশ্বস্ত হতে পারেন, যেসব মেজার্স আমরা কঠিনভাবে নেবো, ইনশাল্লাহ আমরা আশা করি শিগগির আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।
কারা বাজার ম্যানুপুলেট করছে, তাদের শনাক্ত করা গেছে কি না, এমন প্রশ্নে আব্দুর রহমান বলেন, বের অবশ্যই করছি। সেটা পূর্ণাঙ্গ বের করার ব্যাপারটি সময় সাপেক্ষ। আমরা আলোচনা করছি। চিহ্নিতকরণ যখন সুনির্দিষ্ট করা যাবে, তখন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে, লাইসেন্স বাতিল করা হবে, তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের ছাড়পত্র বন্ধ করা হবে।
কীসের ভিত্তিতে আপনারা বলছেন রমজানে পণ্যের সঙ্কট নেই? এমন প্রশ্নের উত্তরে আব্দুর রহমান বলেন, সব পরিসংখ্যান আছে, কোনো কিছুতে শর্টেজ নেই। টেকটিক্যাল রিজনে সেই পরিসংখ্যানের বিস্তারিত আপনাদের (সাংবাদিক) দিতে চাই না। অনুমাননির্ভর এক জিনিস, সন্দেহ করা এক জিনিস, সন্দেহের তালিকা এক জিনিস, সেটিকে সুস্পষ্ট করা আরেক জিনিস। সেই সুস্পষ্টকরণ সম্পন্ন হলেই চিহ্নিত করা যাবে কারা এর সাথে জড়িত। এজন্য একটু ধৈর্য ধরতে হবে।
ডলার সঙ্কট নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, রজমানের যেসব পণ্য আমদানি করি, গত বছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ৮টি প্রোডাক্টের যত এলসি হয়েছিল, এবার তার থেকে ১০-১৫ শতাংশ বেশি এলসি হয়েছে। এলসি ওপেন করার সমস্যা ঠিক না। পণ্যগুলো সময় মতো দেশে এসে পৌঁছাবে বলে আশা করছি। কোনো মধ্যস্বত্বভোগী সমস্যা না করলে দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। পণ্যের কোনো ঘাটতি হবে না।
অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো: আব্দুর রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।