নিউজ ডেস্ক: রয়েল ডিস্ট্রিক্ট খ্যাত দুইশো বছরের প্রাচীন জেলা নোয়াখালীকে পৃথক বিভাগ করার দাবিতে আবারও সোচ্চার হয়েছেন রাজধানীতে বসবাসরত বৃহত্তর নোয়াখালীর সর্বস্তরের জনসাধারণ। জেলার বিভিন্ন উপজেলাকে বিভাজন করে নতুন সাতটি উপজেলা গঠনের দাবিতে শনিবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি তোলেন নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সমন্বয় কমিটি।
সংগঠনটির নেতারা নোয়াখালীকে কোনোভাবে বিভাগ থেকে বঞ্চিত করা হলে অনতিবিলম্বে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেন।
তারা বলেন, সমুদ্রস্না ও গৌরবময় ঐতিহ্যমন্ডিত জেলা নোয়াখালীকে বাদ দিয়ে যে কোনো নামে বিভাগ মেনে নেবে না বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের নোয়াখালী।
বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতির শতকরা ৩৫ ভাগের কাছাকাছি নিয়ন্ত্রণ করে নোয়াখালী অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। ঢাকায় বসবাসরত জনগোষ্ঠীর ২৩ ভাগ বৃহত্তর নোয়াখালী থেকে আসা। দেশের জন্য মূল্যবান রেমিটেন্স নিয়ে আসা প্রবাসীদের একটি বিশাল অংশ নোয়খালীর। সুতরাং নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণা করা না হলে, তা হবে এ এ জেলর নিয়ত সংগ্রামরত মানুষদের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, রাজধানী থেকে সড়কপথে কুমিল্লার দূরত্ব মাত্র ৮০/৮৫ কিলোমিটার, মাত্র ঘণ্টাখানেকের পথ। আর কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা হতে রাজধানী দূরত্ব মাত্র ৩০ কিলোমিটার, আধা ঘণ্টার পথ। সুতরাং রাজধানীর এত কাছাকাছি জেলা কুমিল্লাকে বিভাগ করার কোনো সুযোগ নেই। আবার কুমিল্লা থেকে মাত্র ছয়-সাত কিলোমিটার পূর্বে ভারতের ত্রিপুরার সোনামুড়া বাজার, ফলে ভৌগোলিকভাবে এবং কৌশলগত কারণেও কুমিল্লাকে কোনোভাবেই বিভাগ করা যায় না। মানচিত্রের এক কোণোয় অবস্থিত একটি পকেট জায়গাকে বিভাগ করার কোনোই সুযোগ নেই।
এসময় সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারা বলেন, বঙ্গপোসাগর বিধৌত বৃহত্তর নোয়াখালীকে আলাদা বিভাগ ঘোষণা করা হলে বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে। দেশ-জাতি এগিয়ে যাবে সমৃদ্ধির দিকে। প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণা করবেন, এমন প্রত্যাশা এ অঞ্চলের কোটি মানুষের ।
সভায় বক্তারা বলেন, নোয়াখালী অঞ্চলের আয়তন প্রায় ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার, অথচ এ জেলার উপজেলা সংখ্যা মাত্র নয়টি, পক্ষান্তরে কুমিল্লার আয়তন তিন হাজার ৮৫ বর্গকিলোমিটার, এ জেলায় উপজেলার সংখ্যা ১৭টি। দেশ-জাতির উন্নয়নের স্বার্থে এ বৈষম্য দূর করতে হবে। নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলাকে বিভাজন করে আরও কমপক্ষে সাতটি নতুন উপজেলা করতে হবে
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম ফুয়াদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গুলজার হোসেন সৈকতের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে একাধিক সংগঠন সংহতি প্রকাশ করে এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেয়।
Leave a Reply