ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: সৌদি আরবের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ এনেছেন যোদ্ধাগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরাল্লাহ। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে আইসিলের (আইএস) আদর্শ বিস্তার করছে সৌদি আরব। তারা বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি পাঠাচ্ছে ইরাকে আত্মঘাতী হামলার জন্য। সোমবার সৌদি আরবের বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজকে উদ্দেশ্য করে টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
হাসান নাসরাল্লাহ বলেন- মহামান্য, সন্ত্রাসী সে, যে দায়েশের (আইএস) আদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে। সেই সন্ত্রাসী, যে হাজার হাজার সৌদিকে ইরাক এবং সিরিয়ায় আত্মঘাতী হামলা চালাতে পাঠিয়েছে এবং সেই ব্যক্তি আপনি। ওই ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কড়া সমালোচনা করেন হাসান নাসরাল্লাহ। এ ছাড়া ইয়েমেনে সৌদি আরবের নেতৃত্বে সামরিক অভিযানের সমালোচনা করেন তিনি।
ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহর কারণে আর্থিক সঙ্কটে পড়া লেবাননের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কের ক্ষতি হচ্ছে বলে লেবাননের রাজনৈতিক বিরোধিতা এবং সমালোচনার জবাবে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
হাসান নাসরাল্লাহ বলেন, আমরা তো সৌদি আরবে হামলা করিনি। পক্ষান্তরে তারা বৃহত্তর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, যা পুরো অঞ্চলকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, সৌদি আরব, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কুয়েতের সঙ্গে কূটনৈতিক বিরোধ মিটিয়ে ফেলার জন্য তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে লেবানন। ইয়েমেন এবং ওই অঞ্চলে অন্য লড়াইগুলোতে হিজবুল্লাহর ভূমিকা নিয়ে তারা সমালোচনা করেছে। অক্টোবরে লেবানন থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করে নেয় উপসাগরীয় এসব দেশ। একই সঙ্গে লেবানন থেকে সব রকম পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করে সৌদি আরব।
সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন ইয়েমেন যুদ্ধের সমালোচনা করেছিলেন লেবাননের তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী জর্জ কোরদাহি। এমন সমালোচনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ওই ব্যবস্থা নেয়া হয় লেবাননের বিরুদ্ধে। পরে ওই মন্ত্রী পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তখন থেকে লেবানন নতুন করে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু গত সপ্তাহে লেবাননের রাষ্ট্রীয় বিষয়ে ‘সন্ত্রাসী হিজবুল্লাহ’র সঙ্গে দহরম মহরম বন্ধ করতে লেবাননের প্রতি আহ্বান জানান সৌদি আরবের বাদশা সালমান। গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ফ্রি প্যাট্রিয়টিক মুভমেন্টের তরফ থেকে সম্প্রতি তদন্তের আওতায় এসেছে হিজবুল্লাহ। এই দলটি লেবাননে খ্রিস্টানদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অন্যতম দল। এর প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন। গত সপ্তাহে তিনি সরাসরি হিজবুল্লাহর পরোক্ষ সমালোচনা করেন। উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্কে টানের জন্য দায়ী করা হয় তাদের।
ইরানের আল কুদস বাহিনীর সাবেক কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলায়মানিকে হত্যার দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে হিজবুল্লাহ প্রধান নাসরাল্লাহ বক্তব্য রাখেন। ১৯৯৮ সাল থেকে ইরানের কুদস বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন সোলায়মানি। ২০২০ সালের ৩রা জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় ইরাকের রাজধানী বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে নিহত হন তিনি। এ সময় তিনি ইরাক ও সিরিয়ায় দায়েস (আইএস) সৃষ্টির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেন।
Leave a Reply