বাণিজ্য ডেস্ক: টানা দুই মাস দাম কমার পর আবারও বেড়েছে অভ্যন্তরীণ গন্তব্যের জন্য উড়োজাহাজের জ্বালানি জেট ফুয়েলের দাম। এক ধাপে লিটারে তা বেড়েছে ৭ টাকা।
পদ্মা অয়েল সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের দাম ছিল ৫৫ টাকা। এ বছর একই মাসে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে জেট ফুয়েল কিনতে এয়ারলাইনসগুলো লিটারপ্রতি অতিরিক্ত খরচ করছে ২৫ টাকা করে। দাম বৃদ্ধির এ হার ৪৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
জ্বালানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল বলছে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে জেট ফুয়েলের দাম ছিল ৫৫ টাকা, মার্চে তা বেড়ে হয় ৬০ টাকা। এপ্রিলে তা ছিল ৬১ টাকা।
মে মাসে এক টাকা কমেছে দাম। সে মাসে প্রতি লিটার জেট ফুয়েল সরবরাহ করা হয়েছে ৬০ টাকায়। এরপর আবারও দাম বাড়ে। জুনে তা হয় ৬৩ টাকা, জুলাই মাসে ৬৬ টাকা, আগস্ট মাসে ৬৭ টাকা এবং অক্টোবরে দাম হয় ৭০ টাকা। নভেম্বর মাসে প্রতি লিটার জেট ফুয়েল ৭৭ টাকায় এয়ারলাইনসগুলোকে সরবরাহ করছে পদ্মা অয়েল।
এরপর ডিসেম্বরে আবারও লিটারপ্রতি ২ টাকা দাম কমে। তখন জেট ফুয়েল সরবরাহ করা হয় ৭৫ টাকায়। জানুয়ারিতে আবার ২ টাকা দাম কমে। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে এক ধাপে ৭ টাকা বেড়ে জেট ফুয়েলের দাম হয়
এদিকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্যও জেট ফুয়েলের দাম পুনর্নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন। সেখানে ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫ সেন্ট বা ৬৪ টাকা। জানুয়ারি মাসে পদ্মা অয়েল প্রতি লিটার জেট ফুয়েল ৬৭ সেন্ট বা ৫৭ টাকায় সরবরাহ করেছে এয়ারলাইনসগুলোকে।
এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য জেট ফুয়েলের দাম বেড়েছে লিটারপ্রতি ২২ টাকা। এ দাম বৃদ্ধির হার ৩৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
এভিয়েশন সূত্রে জানা যায়, দেশের সাত অভ্যন্তরীণ রুটে গত বছরের জানুয়ারিতে সর্বনিম্ন ভাড়া ছিল ৩ হাজার ২০০ টাকা। বছর ঘুরতেই তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ হাজার টাকায়। একটি ফ্লাইটের টিকিটপ্রতি সরকার কর বা ট্যাক্স হিসেবে আদায় করে ৫২৫ টাকা। এর বাইরে যোগ হয় বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি হিসেবে ২০০ টাকা। অর্থাৎ ফ্লাইটের প্রতিটি টিকিট থেকে সরকার আদায় করছে ৭২৫ টাকা। এখন জেট ফুয়েলের দাম বাড়ার প্রভাবে আগামীতে টিকিটের দামও বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি ফ্লাইটের মোট খরচের ৪০ ভাগই জ্বালানি খরচ। তার ওপর সরকারি বিভিন্ন ফির কারণে টিকিটের দাম বাড়ে। খরচ সমন্বয় করতে গিয়ে এয়ারলাইনসের সেবার মানেও প্রভাব পড়তে পারে।
এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এ টি এম নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জেট ফুয়েল লিটারে ৮০ টাকা মানে কিন্তু অনেক টাকা। এটা নিঃসন্দেহে চিন্তার বিষয়। এর ফলে এয়ারলাইনসগুলোকে তাদের স্ট্র্যাটেজি নিয়ে আবারও চিন্তা করতে হবে। শেষ পর্যন্ত এই বোঝা যাত্রীদের কাঁধে পড়বে এতে সন্দেহ নেই।
Leave a Reply