রাবি প্রতিনিধি: পরীক্ষার আগেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারীজ বিভাগের প্রশ্নপত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আপলোডের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিভাগের মাস্টার্স-২০২০ এর চলমান পরীক্ষার একটি কোর্সের (এফএমএমসি-৬৪১) প্রশ্নপত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে ফাঁস হয়। এ ঘটনা জানাজানির পর বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, প্রশ্নপত্রটি ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষক এবং পরীক্ষা কমিটির সদস্য ইসতিয়াক হোসাইন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক স্টোরিতে শেয়ার করেন। এ ঘটনা জানাজানির পর আসন্ন পরীক্ষাটি স্থগিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কমিটির সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান মন্ডল।
সূত্র মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী এ ধরণের ঘটনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ অপরাধের ধরণ অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদে সাসপেন্ড, অর্থদণ্ডসহ আইনত ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান রয়েছে।
এ দিকে প্রশ্নপত্র ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে ফাঁসের বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে ফেসবুকে পোস্টকারি অধ্যাপক ইসতিয়াক হোসাইন জানান, পরীক্ষা এবং প্রশ্নপত্রের বিষয়টি অনেক স্পর্শকাতর বিষয়। এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতির অনুমতি ব্যতিত কোনও কথা বলতে রাজি নন তিনি। এ ছাড়া চলমান প্রশ্নপত্র মোবাইল ফোনে সংরক্ষণের বিষয়টি কতটুকু যৌক্তিক এই বিষয়ে জানতে চাইলে কোনও কথা বলতে রাজি হননি অভিযুক্ত ওই অধ্যাপক।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কমিটির সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান মন্ডল বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি তার সাথে কথা বলেছি। বিষয়টি অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এ ঘটনায় আমরা সেই প্রশ্নপত্র বাতিল এবং সংশ্লিষ্ট কোর্সের পরীক্ষা স্থগিত করেছি। এ ছাড়া পরীক্ষার বিষয়গুলো খুবই স্পর্শকাতর। পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করা পরীক্ষা কমিটির দায়িত্ব। তিনি এটা লঙ্ঘন করেছেন।’ এটা অবশ্যই অপরাধ বলে জানান তিনি।
পরীক্ষা স্থগিতের কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ২৭ তারিখ এই কোর্সের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। আমরা পরীক্ষা কমিটির সদস্যরা জরুরি মিটিং করে ওই প্রশ্নপত্র বাতিল করেছি। আপাতত ওই পরীক্ষা স্থগিত। এরই মধ্যে নতুন করে প্রশ্নপত্র তৈরি করে পরীক্ষা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে ফিশারিজ বিভাগের সভাপতি এম মনজুরুল আলম বলেন, ‘পরীক্ষার সার্বিক বিষয় দেখাশোনা করেন পরীক্ষা কমিটি। তবে, আমি বিষয়টি শুনেছি। বিষয়টি ভুলবশতঃ হয়েছে। কিন্তু, প্রশ্নপত্র মোবাইলে সংরক্ষণ করা তার উচিত হয়নি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আলমগীর হোসেন বলেন সরকার বলেন, ‘এ বিষয়ে বিভাগ থেকে অফিসিয়ালি এখনও আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। এ বিষয়ে বিভাগ থেকে জানানো হলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুয়ায়ী ব্যবস্থার কথা জানিয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি অবশ্যই গুরুতর অপরাধ। বিষয়টি সম্পর্কে আমরা এখনও অবগত নই।’ বিষয়টি তাদের নিকট আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply