তাপমাত্রার পারদ সহ্যের বাইরে। ঘর থেকে বাইরে বের হলেই দগ্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। গরম বাতাস ধেয়ে আসছে শরীরের দিকে। এই পরিস্থিতিতে একটু বেচাল হলেই নানা গুরুতর অসুখ শরীরে দানা বাঁধতে পারে।
অত্যধিক এই গরমের সঙ্গে শরীর নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছে না। ফলে দেহের তাপমাত্রাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে কারণেই একাধিক সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। বিশেষত, যারা এই প্রখর রোদে বাইরে কাজ করেন, ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই, তাদের সমস্যা হচ্ছে বেশি।
কী করবেন এই অবস্থায়? কাজের জন্য বাইরে তো যেতেই হবে, আবার সুস্থও থাকতে হবে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, তীব্র গরমের এই সময়ে সচেতন হয়ে কয়েকটি নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হবে। নইলে হিট এক্সহউশন, হিট ক্র্যাম্প, হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়বে।
এই ধরনের সমস্যায় পড়লে কী করবেন? সমস্যা প্রতিরোধের রাস্তাই বা কী?
তীব্র গরমের সঙ্গে শরীর নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে না। ফলে প্রাথমিকভাবে দেখা দেয় হিট এক্সহউশন। এক্ষেত্রে মাথা ঝিমঝিম করা, মাথা ঘোরা, অত্যধিক ক্লান্তি ইত্যাদি সমস্যা দেখা যায়। শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে থাকে পানি ও ইলেকট্রোলাইটস।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতির শিকার হলে ঠান্ডা জায়গায় বসে পড়ুন। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। পানি পান করুন। ওরস্যালাইন মেশানো পানি পান করলে সব থেকে বেশি উপকার মিলবে। এরপর শরীর একটু সুস্থ লাগলে সোজা বাড়ি যান। একটু বিশ্রাম নিন।
তীব্র গরমে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে পানি ও ইলেকট্রোলাইটস বেরিয়ে যায়। এ দুটির অভাব হলে অনেকের পেশিতে টান ধরে। সাধারণত পায়ের পেশিতেই এই সমস্যা বেশি করে হয়।
তবে শরীরের অন্যত্রও এই সমস্যা হতে পারে। গরমে বেরিয়ে এমন সমস্যার সম্মুখীন হলে সঙ্গে সঙ্গে কোথাও বসে পড়ুন। এরপর পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। ব্যথা থাকলে সেই জায়গায় বরফ দিতে পারেন। তাতে কষ্ট কমবে।
গরমকালে সব থেকে গুরুতর বিপদের নাম হিট স্ট্রোক। এক্ষেত্রে বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে শরীর মানিয়ে নিতে পারে না। ফলে দেহের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এই পরিস্থিতিতে রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুত হয়, হার্ট রেট বেড়ে যায়, রোগী অজ্ঞান পর্যন্ত হয়ে যেতে পারেন।
এই অবস্থায় দ্রুত রোগীকে একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দিন। ঘরের পাখা, এসি চালিয়ে দিতে হবে। তার শরীর থেকে জামা-কাপড় সরান। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে গা মুছিয়ে দিন। পারলে তাকে পানি পান করান। এরপর দ্রুত হাসপাতালে নিন। এতেই রোগীর প্রাণ বেঁচে যাবে।
সাবধান থাকতে যা যা করতে হবে
১. বাইরে জরুরি কাজ না থাকলে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে যাবেন না
২. বয়স বেশি, ক্যানসার আক্রান্ত বা যে কোনো ক্রনিক ডিজিজ থাকলে অবশ্যই বেশি সচেতন হন
৩. একান্তই যদি বাইরে বের হতে হয়, তাহলে পানির বোতল, ছাতা, টুপি সঙ্গে রাখুন। চোখে সানগ্লাস রাখুন। যতটা সম্ভব রোদ বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা করুন। প্রচুর পানি পান করুন।
৪. ত্বকে সানস্ক্রিন মাখতে ভুলবেন না
৫. এই সময়ে কোল্ড ড্রিংকস, চা, কফি, গ্লুকোজ গোলা পানি কম পান করুন। কারণ এতে ডিহাইড্রেশন বাড়ার আশঙ্কা থাকে। ব্যস, এই কয়েকটি নিয়ম মেনে চললেই গরমকে আপনি মাত দিতে পারবেন। শরীর থাকবে সুস্থ।