সাজ্জাদুল বারী
গঙ্গোত্রের হিমবাহে একদিন জন্ম হয়েছিল যার
কোন্ মালা জপে হলো পবিত্র গঙ্গা নাম তার।
চললো ছুটে সম্মুখ পানে ভীষণ নিয়ে গতি
কখন কী যে ভেঙে বসে ঠিক নাই তার মতি।
শহর নগর বাজার ভেঙে চললো সন্মুখ পানে
কোথায় গিয়ে থামবে সে কেউ নাহি তা জানে।
ভারতভূমি পিছনে ফেলে আসলো বঙ্গদেশে
পদ্মা নাম করলো ধারণ এই সোনার দেশে এসে।
ভাঙলো লোকের আবাদি জমি ভাঙলো বাড়ি ঘর
পরকে করলো আপন আর আপন করলো পর।
ভাঙছে গড়ছে সন্মুখ পানে চললো বেশ ছুটে
সাধ্য কি আর আছে কারো তার গতিকে টুটে।
অধিক বন্ধুর করলো ভ্রমণ ক্লান্ত হয়ে একা
চাঁদপুর এসে দুই বন্ধুর সাথে হলো তার দেখা।
চাঁদপুরেতে তিন বন্ধু যখন শক্তিশালী জবর
যখন তখন জাহাজ ডুবায় পত্রিকায় হয় খবর।
ডুবায় জাহাজ উল্টে লঞ্চ মারছে মানুষ যত
চলছে কান্না শোকের মাতম দুই তীরেতে শত।
পত্রিকায় তাদের খবর দেখে লজ্জা পেলে বেশ
ভাবলো তখন এবার তাদের টানতে হবে রেশ।
এই না ভেবে দক্ষিণ-পূর্বে রওনা তারা হলো
ক্লান্ত মন ও শরীর নিয়ে সাগরের দেখা পেলো।
সাগর মশায় খুশি ভীষণ তাদের দেখা পেয়ে
থাক না তোরা সঙ্গে আমার কী হবে ফিরে গিয়ে।
ইচ্ছে ছিল থাকবে কদিন ফিরবে তারপর বাড়ি
সাগর মশায় কৌশলেতে নিলো পাসপোর্ট কাড়ি।
সেই দিন থেকেই নিত্য তারা দিচ্ছে জল তাকে
পারছে না আর ফিরতে বাড়ি বলবে আর কাকে।
এই ছিল তার একটি দিক অন্য দিকও আছে
দুই তীরের সব মানুষ যত ঋণি তার কাছে।
বছর জুড়ে পেটে করে রাখছে মায়ের মতো
দিচ্ছে ইলিশ খাচ্ছি সবাই সাধ্য মোদের যত।
তারই জলেই হচ্ছে খাওয়া চলছে ধোয়া সব
কারখানা সব তারই জলে করছে কলোরব।
এই পদ্মার তীরে নগর বন্দর উঠছে গড়ে যত
জুটছে মানুষ নিচ্ছে খোরাক উপলক্ষ সে-তো।
গাছগাছালি বন-বনানীর সকল পশুপাখি
দেখেছো কেউ তাকে ছাড়া চলছে কারো নাকি।
লোক সমাজে সর্বনাশী অকালনাশীও হোক
আমরা বলছি পদ্মার আয়ু লক্ষ বছর হোক।