সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে চিত্রনায়ক শরিফুল ইসলাম রাজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে কিছু ছবি ও ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। যেখানে অশ্লীল ও অশালীন ভাষা কথাবর্তা এবং নানা অঙ্গভঙ্গিতে দেখা যায় অভিনেত্রী তানজিন তিশা, চিত্রনায়িকা নাজিফা তুষি এবং সুনেরাহ বিনতে কামালকে। এ ঘটনা নিয়ে যখন নানা সমালোচনা ও বিতর্ক, সেই সময় আবেগঘন দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিলেন শরিফুল রাজ।
বুধবার (৩১ মে) দুপুর সাড়ে ৩টায় ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে স্ট্যাটাসে এ অভিনেতা লেখেন, ‘মানুষ প্রতি মুহূর্তে একটু একটু করে পরিণত হয়। জন্মের পর নিজের পায়ে চলতে শিখতেও কয়েক বছর লেগে যায়। আর ঠিকঠাক কথা বলা শিখতে লেগে যায় আরও কিছু বছর। কিন্তু এই বলা আর চলার যাত্রা কখনো শেষ হয় না। তবে এই যাত্রায় আমরা কিছু মানুষের সঙ্গে পরিচিত হই, যাদের সঙ্গে সুখ, দুঃখ, কাজের আলাপ কিংবা কাজহীন দিনের আলাপ, সুস্থতা এবং পাগলামী সবকিছুই ভাগ করে নেয়া যায়। যাদের সঙ্গে চলার বা কথা বলার বিশেষ কোনো শর্ত থাকে না। শর্ত থাকে কেবল একটাই- সেটার নাম বন্ধুত্ব।’
এ অভিনেতা লেখেন, ‘নিশ্চয়ই আপনাদের প্রত্যেকেরই এমন অনেক বন্ধু রয়েছে যাদের সঙ্গে আপনারা আভিধানিক শব্দে কথা বলেন না, একসঙ্গে পথ চলার সময় ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়ে পথ চলেন না। যাদের সঙ্গে অনেক বেফাঁস কথা বলেন, কারণ বন্ধুত্ব তো এমনই। লিঙ্গ, বর্ণ, বয়সসহ সব সীমারেখার উপরে মানুষের বন্ধুত্ব।’
‘কিন্তু সমস্যা হয়, যখন কেউ অসৎ উদ্দেশ্যে বন্ধুত্বের মতো সম্পর্কের মাঝখানে লৈঙ্গিক পরিচয়ের সীমারেখা টেনে, ব্যাপারটাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চায়। যখন কেউ বন্ধুদের মধ্যকার দ্বিধাহীন আড্ডার আলাপ টক অব দ্যা টাউনে পরিণত করে। আমিও তেমনই এক সমস্যায় পড়েছি।
আমি গত কয়েকদিন যাবত সিনেমার ডাবিং নিয়ে ব্যস্ত, আমার সিনেমার কিছু গল্পের স্ক্রিপ্ট রিডিং করার কথা, এইগুলা নিয়েই আমি ঠিকমত সময় দিতে পারছি না। যখনই সময় পাচ্ছি গল্পের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছি, তার মধ্য হঠাৎ করে কে বা কারা এসব করে আমাকে হেনস্তার শিকার করছে যা ভাবতেই আমি হতবাক হয়ে গেলাম। আমাকে নিয়ে শেষ যতদিন থেকে নানাবিধ সত্য মিথ্যার মিশ্রণে ঘটনার চাউর করছে, আমি তার শুরু থেকেই নীরব ছিলাম। কিন্তু নীরবতা মানেই দুর্বলতা না।’
তিনি লেখেন, ‘আমার ফেসবুক প্রোফাইলের পাসওয়ার্ড/অ্যাকসেস এমন কারো কাছে আছে অথবা হ্যাক করে কেউ আমার দীর্ঘকালের বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গের নিতান্ত বন্ধুত্বের আড্ডার ঘটনা লিক করে দেয়। যে বা যারা এই কাজ করেছে, তাদের উদ্দেশ্য ছিল আমাদের হেনস্তা করা। হয়তো তারা সফলও হয়েছে।’
‘আমি আমার তিন বন্ধু ও সহকর্মীর কাছে শর্তহীন দুঃখ প্রকাশ করছি; যারা আমার খুব ভাল বন্ধু দীর্ঘদিনের। সেই বন্ধুত্বের কোনো লিঙ্গ নেই। আমার কারণে তাদের হেনস্তার শিকার হতে হলো বলে। আমার সব শুভাকাঙ্ক্ষী, সমর্থক ও সমালোচকদের কাছেও আমি দুঃখ প্রকাশ করছি, বন্ধুদের আড্ডার ঘটনা নোংরা উদ্দেশ্যে স্প্রেড করে মিসলিড করা হয়েছে বলে।’
সবশেষ তিনি লেখেন, ‘বহুবার হোঁচট খেয়েই তো হাঁটতে শিখেছি। আবারও হোঁচট খেলাম। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসা সঙ্গে থাকলে নিশ্চয় আরও পরিণত হবো, শিখবো অতীতের ভুল থেকে। আমাকে আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় রাখবেন। কারণ আপনাদের সমর্থন ছাড়া একজন শরিফুল রাজ কিছুই নয়। জগতের সব প্রাণী সুখী হোক। সবাইকে ভালোবাসা ও শুভকামনা।’