হারিকেন ইদালিয়ার তাণ্ডবে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডার বেশ কয়েকটি শহর লণ্ডভণ্ড হয়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে তছনছ হয়ে গেছে রাজ্যর বিশাল এলাকা। ইতোমধ্যে ঝড়ে তিনজনের প্রাণহানির খবর এসেছে।
বুধবার রাত পর্যন্ত ফ্লোরিডায় সোয়া দুই লাখেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিহীন ছিল। এছাড়া জর্জিয়াতেও দুই লাখ ৩০ হাজারের মতো মানুষ অন্ধকারে আছে। ঝড়ের পর বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ফ্লোরিডায় ৪০ হাজারের মতো কর্মীকে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। খবর বিবিসি ও সিএনএনের।
হারিকেন ইদালিয়া বিপজ্জনক ক্যাটাগরি-৩ ঝড় হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় আঘাত করে। হারিকেন আঘাত হানার আগে ফ্লোরিডাসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ১২৫ বছরের মধ্যে এই অঞ্চলে এত মারাত্মক ঘূর্ণিঝড় দেখা যায়নি। হারিকেনের বাতাসের গতি ভয়াবহ রূপ নেয়। ন্যাশনাল হ্যারিকেন সেন্টার দেশের একাধিক অংশে রেড এলার্ট জারি করে। নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয় সাধারণ মানুষকে।
ফ্লোরিডায় ধ্বংসলীলা চালানোর পর ঘূর্ণিঝড়টি জর্জিয়া রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলের দিকে চলে যায়। সেখানে ঝড়টির কারণে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।
ঝড়ে রাজ্যের বিগ বেন্ড অঞ্চলের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সেখানকার অনেক এলাকা সাইক্লোনের প্রভাবে সৃষ্ট হওয়া জলোচ্ছ্বাসের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
ইদালিয়া মোকাবেলায় ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস ন্যাশানাল গার্ডদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই পরিস্থিতিকে জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, সমুদ্রের পানি মহাসড়কগুলোতে চলে এসেছে এবং সাধারণ মানুষের বাড়ি-ঘর তলিয়ে গেছে।
ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পরপরই পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারে বোট নিয়ে টহল দিচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। এ সময় জর্জিয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েকশ মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এরইমধ্যে তাম্পা ইন্টারন্যাশালান বিমানবন্দর এবং সেন্ট পিট -ক্লিয়ারওয়াটার ইন্টারন্যাশানাল বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিমাঞ্চল, মধ্য ও পূর্ব উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর, ক্যারিবিয়ান সাগর এবং মেক্সিকো উপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়কে ‘হারিকেন’ বলা হয়। যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, কিউবা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে হারিকেন আঘাত করে।