আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেছে ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনি প্রতিনিধিদল। বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে তারা কোনো কথা বলেনি। তাদের জানার আগ্রহ ছিল আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারত ও চীনের সম্পর্ক কেমন সে বিষয়ে।
বৈঠক শেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমদ।
তিনি বলেন, আপকামিং ইলেকশন নিয়ে কোনো কথা হয়নি। তারা কোনো প্রশ্ন করেনি, আমরাও কোনো উত্তর দিইনি।
এর আগে বিকাল ৪টার দিকে ইউএস ইনস্টিটিউট ফর পিস (ইউএসআইপি) এর প্রতিনিধিদলটি কার্যালয়ে পৌঁছালে তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব) মোহাম্মদ ফারুক খান। এসময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. ইনাম আহমেদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ড. শাম্মী আহমদ বলেন, ‘প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলাদেশের ফরেন পলিসি এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই সাবকন্টিনেন্টে যে রাজনৈতিক টানাপোড়েন এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও যাচ্ছে এসব বিষয়ে বাংলাদেশের কী ভূমিকা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কী চিন্তা করছে, এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের এই নেত্রী বলেন, ‘তারা জানতে চেয়েছে ইন্ডিয়ার সঙ্গে, চায়নার সঙ্গে ও এই উপমহাদেশের যে দেশগুলো আছে তাদের সঙ্গে আমাদের রিলেশন কেমন। আমরা আমাদের বিষয়গুলো জানিয়েছি। বাংলাদেশে পররাষ্ট্রনীতি, আমাদের জাতির পিতা যেটা দিয়ে গেছেন, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব-কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, এটাই ফোকাস করা হয়েছে।’
প্রতিনিধিদলটি চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চেয়েছে জানিয়ে ড. শাম্মী বলেন, চায়না এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক জানতে চেয়েছে। তারা নিজেরাও স্বীকার করেছে, চায়না একটি ইকোনমিক পাওয়ার। চায়না আমাদের অর্থনৈতিক পার্টনার। তারা জানতে চাচ্ছে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কেমন। আমরা জানিয়েছি, ইন্ডিয়া আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। আমাদের দুর্দিন ৭১ সালে ভারত যেভাবে আমাদের পাশে ছিল, সেটাকে আমরা সম্মানের চোখেই দেখি।
শাম্মী বলেন, মিয়ানমার আমাদের ওপর ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা চাপিয়ে দিয়েছে। তারপরও আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছি। শুধু আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ নয়, গ্লোবাল ভিলেজে আমরা আলোচনার মাধ্যমে সবগুলো সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করি। অন্য কোনোভাবে আমরা করি না। পররাষ্ট্রনীতিকে আমরা ফলো করি। এই বিষয় নিয়ে মূলত আলোচনা হয়েছে।
‘এদের আগ্রহ ছিল ইন্দো-চায়না রিলেশন নিয়ে, হিন্দু প্যাসিফিক নিয়ে একটা ব্যাপার ছিল, একই সঙ্গে ইউরোপ, আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের রিলেশন নিয়ে আলোচনার বিষয় ছিল’—যোগ করেন শাম্মী।
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বলেন, ভারতের হিন্দুত্ববাদ জাগরণ নিয়ে তাদের একটা প্রশ্ন করেছে। আমরা উত্তর দিয়েছি- আমরা কারো ইন্টারনাল (আভ্যন্তরীণ) বিষয় নিয়ে হস্তক্ষেপ করি না। আমরা কারো ইন্টারন্যাল ব্যাপারে কথা বলি না। আমার অন্য দেশের মতবাদকে সম্মান দিই। ইন্ডিয়াতে কি হচ্ছে না হচ্ছে, চায়নাতে কী হচ্ছে না হচ্ছে, এটা তাদের দেশের জনগণের বিষয়। আমাদের দেখার বিষয় না।