Tuesday, May 7, 2024

গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে রাতে, আঘাত হানবে শুক্রবার

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাত ১২টা থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। এটি দেশের ১১টি উপকূলীয় অঞ্চলের ১১টি জেলায় আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টার মধ্যে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে ‘মিধিলি’। এর নাম দিয়েছে মালদ্বীপ।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিমে যে লঘুচাপটি সৃষ্টি হয়েছিল মঙ্গলবার, সেটি গতকাল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বৃহস্পতিবার গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে, যেটা খুব অল্প সময়ের মধ্যে আজ রাত ১২টা থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ১১টি জেলায় এই ঘূর্ণিঝড়টির আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। জেলাগুলো হলো- সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম।

নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হলে বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৬৪ কিলোমিটার থেকে ৮৮ কিলোমিটার- এমন তথ্য জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার গতিতে উপকূলে আঘাত হানতে পারে।

তিনি বলেন, এটি এখন মোংলা ও পায়রা বন্দর থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এর এগিয়ে যাওয়ার গতি বিশ্লেষণ করলে বলা যেতে পারে, ঘূর্ণিঝড় হিসেবে এটি আগামীকাল দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানবে।

তিনি জানান, যেহেতু এখন পূর্ণিমা নেই এবং বাতাসের গতিবেগও কম, সেজন্য জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কাও অনেক কম। আবহাওয়া দপ্তর থেকে বিপৎসংকেত দেওয়া হবে। সেটা সাত মাত্রায় উঠলেই যেন দ্রুততার সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দেব, তারা যেন আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখেন।

আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত খাবার ও নিরাপদ খাবার পানি ব্যবস্থা রাখতেও নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, হামুন ঘূর্ণিঝড়ের সময় প্রতিটি জেলায় নগদ টাকা, শুকনা খাবার, শিশু খাদ্য ও গোখাদ্যের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। আশা করছি, সেই অর্থ ব্যবহার করে আরও কিছু প্রয়োজন হলে আমাদের জানালে ব্যবস্থা করে দেব।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর ভয়াল ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত হেনেছিল। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডর নামে আরও একটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। যে কারণে এ মাসটি বেদনাদায়ক। সিডরে ৩ হাজার ৬০০ লোক মারা গেছেন। যে কারণে নতুন ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে আমরা সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করবো।

ঘূর্ণিঝড়টি খুলনা ও বরিশালের মাঝখান দিয়ে (খেপুপাড়ার ওপর দিয়ে) উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে সভায় আলোচনা হয়েছে।

এদিকে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (৪৪-৮৮ মিমি) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিমি বা তার বেশি) বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।

গত ২৪ অক্টোবর দিবাগত রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে। এতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে প্রাণহানি এবং বসতবাড়ি ও ফসলও নষ্ট হয়।

- Advertisement -spot_img

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর