Friday, January 17, 2025

বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে: যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) ভোরে ২০২২ সালের সন্ত্রাসবিরোধী বৈশ্বিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অধ্যায়ে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষিত বাংলাদেশ পুলিশের ইউনিটগুলো কয়েক ডজন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর অন্য ইউনিটগুলো বিচারবহির্ভূত হত্যা ও অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।’

প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সহযোগিতার কথা তুলে ধরা হয়েছে। তবে র‌্যাব ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসিইউ) স্পেশাল ওয়েপন্স অ্যান্ড ট্যাকটিকস (সোয়াট) ডিভিশন লেহি আইন সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা পাবে না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২২ সালে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী সহিংসতার কিছু ঘটনা ঘটেছে। কারণ, কর্তৃপক্ষ কঠোরভাবে জঙ্গিদের, বিশেষ করে আল-কায়েদা অনুগত গোষ্ঠী জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এবং আইএস অনুগত জেএমবির শাখা নব্য জেএমবিকে অনুসরণ করে চলেছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অন্য বাংলাদেশি সরকারি কর্মকর্তারা প্রায়ই সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে বাংলাদেশের ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতির ওপর জোর দিয়েছেন। তবে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী সংগঠিত জিহাদি জঙ্গি গোষ্ঠী যেমন: আল-কায়েদা এবং আইএসআইএসের উপস্থিতি অস্বীকার করে চলেছে। গত বছর অক্টোবরে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া নামে কথিত আল-কায়েদা অনুপ্রাণিত গোষ্ঠীকে ঠেকাতে অভিযানের ঘোষণা দিয়েছিল।

এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর প্রতিবেদনে বাংলাদেশে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার বিরুদ্ধে র‌্যাবের অভিযান ও কয়েকজন সদস্য গ্রেপ্তার হওয়ার তথ্যও তুলে ধরেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের আটক ও গ্রেপ্তারের ভিত্তি হিসেবে আছে। ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনলাইনে উগ্রবাদী প্রচারণা, অর্থায়ন, সদস্য সংগ্রহের জন্য গ্রেপ্তারের সুযোগ থাকার বিষয়টি আছে মার্কিন প্রতিবেদনে। সরকারের সমালোচকরা ওই গ্রেপ্তারের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় বলে দেশি ও আন্তর্জাতিক সমালোচকরা অভিযোগ করে থাকেন।

উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করেছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা শিবিরে সহিংসতা উদ্বেগের কারণ হয়ে আছে বলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে।

আরও পড়ুন: পণ্যের জিএসপি সুবিধা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশকে সতর্কবার্তা ইইউ’র

সহিংসতা ও সন্ত্রাসের জন্য কারাগারে উগ্রবাদীতে পরিণত করার বিষয়টি বড় উদ্বেগের কারণ জানিয়ে প্রতিবেদনে বাংলাদেশে সন্ত্রাস মোকাবিলায় দায়িত্বরত বিভিন্ন ইউনিট ও সংস্থার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশ ইন্টারপোলের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করে। তবে বাংলাদেশের নিজস্ব কোনো সন্ত্রাসী নজরদারি তালিকা নেই।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) নেতৃত্বে একটি ‘অ্যালার্ট তালিকা’ প্রকল্প সরকারের বিবেচনায় আছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ বর্তমানে আকাশপথের যাত্রীদের আগাম তথ্য নিয়মিতভাবে যাচাই করে না বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

- Advertisement -spot_img

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর