নিজস্ব প্রতিবেদক : চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে আসন্ন নির্বাচনে জনপ্রিয় মুখ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বৈদেশিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা শেখ সাজ্জাদ রশিদ সুমন। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এই আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং এবং দলীয়করণের জন্য জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী হিসেবে শেখ সাজ্জাদ রশিদ সুমন সুবিধাজনক অবস্থানে এগিয়ে আছেন।
শেখ সুমন বিগত দীর্ঘ বছর যাবত নিরলসভাবে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন। এলাকার প্রতিটি দুর্যোগ-দুর্দিন-দুঃসময়ে মানুষের পাশে থেকে তাদের আপনজন হিসাবে কাজ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে তার পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে। শেখ সাজ্জাদ রশিদ সুমনের জনকল্যাণে নিবেদিত কর্মযজ্ঞ ইতোমধ্যে ফরিদগঞ্জ উপজেলাতে দলমত নির্বিশেষে সকলকে আপ্লুত করেছে।
শেখ সাজ্জাদ রশিদ সুমন মানবিক ও সামাজিক কাজ হিসাবে ফরিদগঞ্জ এলাকায় সম্প্রতি সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে ৭৫০ রোজাদারদের মাঝে ইফতার সামগ্রী প্রদান, করোনা মহামারির সময় ১৭ শ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদান, ৪ হাজার অসহায় পরিবারের মাঝে কম্বল বিতরণ, ধর্মীয় উপসনালয়ে ডিপ টিউবওয়েল প্রদান, ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ডক্টর সেফটি চেম্বার প্রদান, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাঝে করোনাকালীন সময়ে ৩০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রদান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা ভ্যাকসিন সুরক্ষিত রাখার জন্য এসি প্রদান,অসহায়দের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের জন্য ৮ শতাংশ ভূমি প্রদান, অসহায়দের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান, অজপাড়া গাঁয়ে শিক্ষা বিস্তারের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা, অসহায়দের বাসস্থানের জন্য গ্রহ নির্মাণ, গ্রামীণ সড়ক মেরামত,স্বেচ্ছাসেবায় উৎসাহিত করতে যুবকদের মোটর সাইকেল প্রদান ও স্বাবলম্বী করতে নগদ টাকা প্রদান করাসহ জনসাধারণের স্বার্থে উন্নয়নমূলক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ফরিদগঞ্জে তার সভা সমাবেশগুলোতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটে।
বনেদি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান
শেখ সাজ্জাদ রশিদ সুমনের পিতা-মাতাসহ পরিবারের সকল সদস্যই উচ্চশিক্ষিত। পরিবারের সদস্যদের রয়েছে রাজনৈতিক ঐতিহ্য। তিনি নিজেও উচ্চশিক্ষিত। শেখ সাজ্জাদ রশিদ সুমন বিশ্বের বেশ কয়েকটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুনামের সহিত উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। তিনি সুইডেনের কালমার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইনোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাচেলর অফ সায়েন্স বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়াও তিনি যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিতে অধ্যয়নরত। তার পিতা মরহুম এম এ রশিদ শেখ ছিলেন দেশের প্রখ্যাত আইনজীবী। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ঢাকা মহানগরীর পাবলিক প্রসিকিউটরও ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর হত্যা মামলা পরিচালনার অন্যতম প্রধান আইনজীবী ছিলেন তার বাবা। শেখ সাজ্জাদ রশিদের মাতা বেগম মমতাজ রশিদ একজন রত্নগর্ভা। তিনি ২০০৫ সালে ‘রত্নগর্ভা মা’ পুরস্কার পেয়েছেন। বেগম মমতাজ রশিদ ছিলেন রাজধানীর কোতয়ালী থানার প্রথম মহিলা কমিশনার।
শেখ সাজ্জাদ রশিদ সুমনের বোন ড. নাজমা ফেরদৌস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউট (হাবল টেলিস্কোপ) নাসা (NASA) “প্রিন্সিপাল কম্পিউটার সায়েন্টিস্ট” হিসেবে কর্মরত আছেন।
তাঁর নানা ব্যারিস্টার খন্দকার আবু বকর ছিলেন জাতীয় পার্টি সরকারের আইন ও ধর্ম বিষয়কমন্ত্রী। আর দাদা ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ও ব্যবসায়ী প্রয়াত হাজী কাজিমুদ্দিন শেখ।
একান্ত সাক্ষৎকারে শেখ সাজ্জাদ রশিদ সুমন বলেন, ফরিদগঞ্জে উন্নয়নের স্বর্ণযুগ ফিরে আনতে প্রয়াত সাবেক রাস্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে অনুসরণ করে কাজ করছি। প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রপ্রধান থাকাকালে সর্বক্ষেত্রে তাঁর নেয়া পদক্ষেপ ও সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ড ইতিহাস হয়ে আছেন।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে পল্লীবন্ধু এরশাদের অবদান কেউই অস্বীকার করতে পারবে না। জনগণের নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নামে বিরোধীরা নানা ধরনের প্রোপাগান্ডা ছড়ালেও তিনিই প্রথম সরকারি সেবা জনগণের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে রাষ্ট্রকাঠামো বিকেন্দ্রীকরণের উদ্যোগ নেন। তিনি দেশের ৪২টি মহকুমাকে ৬৪টি জেলায় পরিণত করেন। এরশাদ ১৯৮২ সালের ৭ নভেম্বর থেকে ১৯৮৩ সালের ৭ নভেম্বরের মধ্যে সারাদেশে ৪৬০ উপজেলা পরিষদ সৃষ্টি করেন। যার সুফল ভোগ করছেন দেশের সকল জনগণ।
পাশাপাশি এরশাদ ছিলেন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের বাংলাদেশে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করেন তিনি। তাঁর ক্ষমতা গ্রহণের আগে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেরও রোববার ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। তিনি গরিবের হজ ‘জুমার নামাজ’ কে প্রাধান্য দিয়ে শুক্রবারকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ঘোষণা করেন।
ফরিদগঞ্জে জাতীয় পার্টির সরকারের সময়কালের বড় কিছু উন্নয়নের তথ্য উল্লেখ করে শেখ সাজ্জাদ রশিদ বলেন, ফরিদগঞ্জে যতগুলো বড় উন্নয়ন হয়েছে তার অধিকাংশই করেছে জাতীয় পার্টি। ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ, ফরিদগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসা, ফরিদগঞ্জ বেইলি সেতুসহ অসংখ্য স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা-মসজিদ, রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মিত হয়েছে এরশাদ সরকারের আমলেই। সেক্ষেত্রে আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে ফরিদগঞ্জের উন্নয়নে জাতীয় পার্টির সেই স্বর্ণযুগ ফিরিয়ে আনবো। সারাদেশের মধ্যে ফরিদগঞ্জ হবে একটি আধুনিক, উন্নত ও স্মার্ট উপজেলা। এটি অর্জনে সকলের পরামর্শে সঠিক পদক্ষেপ নিতে চাই।
জাতীয় পার্টির এই নেতা আরও বলেন, আমি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমি বিশ্বাস করি, দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে ফরিদগঞ্জের মানুষের সেবা করতে হবে। ফরিদগঞ্জের প্রতিটি মানুষের সেবা করার পবিত্র দায়িত্ব নিতে চাই। আমি সম্মান রেখে বলতে চাই, যারা অতীতে দায়িত্বশীল পদে ছিলেন এবং আছেন, সবাই তাদের মতো করে কাজ করার চেষ্টা করেছেন।
তিনি বলেন, এখানে অনেক কাজ হয়েছে, তবে এখনো বহু কাজ বাকি। আমি অসম্পন্ন কাজ শেষ করতে চাই। আমি সবাইকে সাথে নিয়ে যে উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। দল-মত নির্বিশেষে, স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা মাধ্যমে একটি আধুনিক, উন্নত, ডিজিটাল ও স্মার্ট ফরিদগঞ্জকে রূপান্তরের লক্ষ্যে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। শুধু কথায় না – সঠিক পরিকল্পনা এবং কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে চাই – আমরাও পারব, ইনশাআল্লাহ।