নিজস্ব প্রতিবেদক
দ্বাদশ জাতীয় সংসদে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ আজ বুধবার। এ দিন সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। শপথ বাক্য পাঠ করাবেন চলতি একাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয়ের সূত্র ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এ তথ্য জানিয়েছেন। সংসদ সচিবালয় সূত্র আরও জানিয়েছে, শপথ অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে নেয়া হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, আগামী ১১ জানুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেবেন। এ জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। তবে কারা মন্ত্রী হবেন, সেই তালিকা এখনও আসেনি।
তবে সূত্র বলছে, এবারের মন্ত্রিসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে পারেন।
তরুণদের মধ্যে যোগ হতে পারেন ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী-ক্যান্টনমেন্ট) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত।
অন্যদিকে, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম নতুন মন্ত্রিসভায় যুক্ত হতে পারেন।
টেকনোক্র্যাট কোটায় আবারও মন্ত্রিসভার সদস্য হতে পারেন সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। জামালপুর-৫ (সদর) আসনের এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ এবং নড়াইল-২ আসনের এমপি ও ক্রিকেট তারকা মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাকেও মন্ত্রী বানাতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
ঐতিহ্যগতভাবে শপথ অনুষ্ঠান বঙ্গভবনে হয়ে থাকে, এ বছরও বঙ্গভবনে হবে। মন্ত্রিসভার শপথের সময় ১৩-১৪০০ অতিথিকে আমন্ত্রণ করা হয়।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী সংসদ সদস্যদের ফলাফল গেজেটে অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সংসদ সদস্যদের শপথের বিষয়টি জাতীয় সংসদ সচিবালয় এবং মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ ও মন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টনের কাজে দাপ্তরিক সহায়তা দিয়ে থাকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। নির্বাচনের পরের দিন প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট শাখা এসব নিয়ে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে।
রীতি অনুযায়ী, নবনির্বাচিতদের গেজেট প্রকাশের পর শপথের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্পিকারের কাছে তা পাঠাবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। সংসদ নির্বাচনের ফল গেজেট আকারে প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে শপথ গ্রহণের ৩০ দিনের মধ্যে অধিবেশন ডাকতে হবে।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪১.৮ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। সারাদেশে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে ভোট হয়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন বিদেশি পর্যবেক্ষক দল।
নির্বাচন দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ওআইসি, রাশিয়া, ফিলিস্তিন, কানাডা, জাপান, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, যু্ক্তরাষ্ট্র, গাম্বিয়াসহ বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকরা। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত, রাশিয়া, চীন, ভুটান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশ অভিনন্দন জানিয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ফলে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি। সবশেষ ঘোষণা অনুযায়ী আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২২৫টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, কল্যাণ পার্টি ১টি এবং স্বতন্ত্র পেয়েছে ৬১টি আসন।