বেলাল হোসেন
বাজার নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকারি সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। কিন্তু এক সপ্তাহ পর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নির্ধারিত সেই মূল্যে মিলছে না বেশির ভাগ পণ্য। রোজা শুরুর আগে কিছু পণ্যের দাম হঠাৎ বেড়ে যায়। আর কিছু পণ্য আগে থেকেই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছিল। ফলে রোজার সময় অতিরিক্ত খরচের চাপ নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন সাধারণ মানুষ। এমন প্রেক্ষাপটে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর উৎপাদন খরচ বিবেচনায় ২৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়।
শুক্রবার (২২ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, বাড্ডা, জোয়ার সাহারা ও ডেমরার সারুলিয়া বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে আলু, রসুন, জিরা ও চালের দাম বেড়েছে। তবে এ সময় কমেছে পেঁয়াজ, ব্রয়লার মুরগি, মসুর ডাল ও ডিমের দাম। এ ছাড়া কমেছে কয়েক ধরনের সবজির দামও। তবে এসব পণ্যের দাম কমলেও তা সরকারের ঘোষণা করা মূল্যের চেয়ে এখনো বেশি।
রোজার শুরুতে প্রতি কেজি ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম ছিল যথাক্রমে ২৩০ ও ৩৪০ টাকা। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগি ২১০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ব্রয়লার মুরগির দাম ১৭৫ টাকা ও সোনালি মুরগির দাম ২৬২ টাকা কেজি নির্ধারণ করেছে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৬৫ টাকা বিক্রি হওয়ার কথা। তবে রাজধানীর বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে। উত্তর শাহজাহানপুরের খলিল গোশত বিতানে রোজার শুরুর দিন থেকে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৯৫ টাকা বিক্রি করা হচ্ছিল। তবে সে দোকানেও দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ওই দোকানে এখন গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৯৫ টাকায়।
একইভাবে খুচরা পর্যায়ে মসুর ডাল (মোটা) ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা, পাঙাশ মাছ (চাষের) প্রায় ১৮১ টাকা, কাতল মাছ (চাষের) প্রায় ৩৫৪ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা ও আলু প্রায় ২৯ টাকায় বিক্রির নির্দেশনা দেয় কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। কিন্তু বাজারে এসব পণ্য ৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
রোজার শুরুতে বেড়ে যাওয়া আরও কয়েকটি পণ্যের দাম কিছুটা কমেছে। বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা কমায় ও সরবরাহ বেশি থাকায় এসব পণ্যের দাম কমেছে। যেমন রোজার শুরুতে মানভেদে প্রতি হালি লেবু বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। যা আজ ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে টমেটো, শসা ও বেগুনের দামও কেজিতে ১৫ থেকে ৩০ টাকা কমেছে। তবে লাউ, চালকুমড়া, বাঁধাকপি, ফুলকপিসহ অন্যান্য সবজি গত সপ্তাহের দামে অপরিবর্তিত রয়েছে।
সবজি বিক্রেতা সিরাজ হোসেন বলেন, সরকার সবজির যে খুচরা দর নির্ধারণ করেছে, অনেক সবজি আমরা পাইকারিতেও সেই দামে কিনতে পারি না। পাইকারিতে কমে পেলে আমরাও নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রি করতে পারব।
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে সরকার ডিম, আলু ও দেশি পেঁয়াজের দাম বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ পার হওয়ার পরও যখন বাজারে এই তিন পণ্যের দাম কমেনি, তখন সরকার ডিম ও আলু আমদানির অনুমতি দেয়।