Monday, November 25, 2024

ঢামেকে জরুরি বিভাগের সব কার্যক্রম শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, ক্যাজুয়ালিটি এবং নিউরো সার্জারিতে চিকিৎসাসহ অন্যান্য চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম আশ্বাস দিলে কমপ্লিট শাটডাউন স্থগিত ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা। এরপর কাজে ফেরার ঘোষণা কথা জানান ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে আসাদুজ্জামান সাংবাদিককে বলেন, কর্মরত চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, আনসার সদস্যরা সার্বক্ষণিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

এর আগে গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের অবহেলায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষার্থী আহসানুল হক দীপ্তর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের তিন চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন চিকিৎসকরা।

একইদিন মধ্যরাতে খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ এলাকা থেকে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহতরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে আসেন। তখন অন্য আরেক গ্রুপ চাপাতিসহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভেতরে ঢুকে যায়। এ সময় হাতেনাতে চারজনকে আটক করে সেনাবাহিনীকে দেয় কর্তৃপক্ষ। পরে অন্য আরেক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ওয়ানস্টপ ইমার্জেন্সি সেন্টারে ভাঙচুর চালায় রোগীর স্বজনরা। এতে করে নিরাপত্তা শঙ্কায় জরুরি বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন চিকিৎসকরা। আলটিমেটামের ২৪ ঘণ্টা শেষ হওয়ার আগেই কর্মবিরতিতে যান তারা।

আজ রোববার ঢাকা মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দেন ঢামেক নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন আব্দুল আহাদ। দুপুরে প্রশাসনিক ব্লকে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি। জানা যায়, তারা চার দফা দিয়েছেন। পরে চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।

আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের প্রতিনিধি দল ও ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামানের সঙ্গে আলোচনায় আছেন শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমও বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পৌঁছেছেন। তিনি পরিচালকের কার্যালয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। এরইমধ্যে বিজিবি সদর দপ্তর জানিয়েছে, ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

 

আন্দোলনরত চিকিৎসকদের চার দফা দাবি হলো—
১. হাসপাতালের মতো জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে যেসব ব্যক্তি বা কুচক্রী মহল এই ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করা। দ্রুত বিচার আইনের মাধ্যমে তাদের শাস্তির আওতায় আনা।
২. নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে অবিলম্বে দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য পুলিশের (আমর্ড ফোর্স) মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৩. নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে হাসপাতালে রোগীর ভিজিটর (ভিজিটর কার্ডধারী) ছাড়া বহিরাগত কাউকে কোনোভাবেই ভেতরে প্রবেশ করতে না দেওয়া। বিষয়টি স্বাস্থ্য পুলিশের মাধ্যমে নিশ্চিত করা।

৪. হাসপাতালে রোগীর সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো অবহেলা-অসংগতি পরিলক্ষিত হলে, তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ আকারে জানানো। এভাবে শাস্তি নিশ্চিত করা যেতে পারে, কিন্তু কোনোভাবেই আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না।

- Advertisement -spot_img

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর