আমাদের দেশে বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে পান খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকেরই। বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠানে বা অতিথি আপ্যায়নে খাওয়ার শেষে পানের প্রচলন অনেক আগে থেকেই চলে আসছে।
আয়ুর্বেদ মতে, পানের ভেষজ গুণ অনেক। পান পাতার একাধিক উপাদান নানা ধরনের রোগের প্রকোপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখনো নানা শারীরিক সমস্যায় এই পাতাকে কাজে লাগিয়ে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে।
তবে চিকিৎসকদের মতে, চুন ও জর্দাসহ পান খেলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তবে জর্দা ছাড়া পান খেলে এর বেশকিছু উপকারিতা রয়েছে। তাহলে জেনে নেয়া যাক পান পাতার এমনি কিছু উপকারিতা সম্পর্কে-
১) কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর পান শরীরের পিএইচ-এর ভারসাম্য রক্ষা করে। যার ফলে হজম সংক্রান্ত অনেক সমস্যাই নিয়ন্ত্রণে থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে হলে পান পাতা ছেঁচে সেই রস খেলেও উপকার পাবেন।
২) মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য ভাল রাখে
পান পাতায় রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল যৌগ, যা মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সামান্য পরিমাণ পানের পাতা প্রতিদিন চিবোতে পারলে দাঁত এবং মাড়ির স্বাস্থ্য ভাল থাকে। পান পাতার অ্যান্টিসেপটিক গুণ দাঁতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ রোধ করে।
৩) শ্বাসযন্ত্রের জন্য ভাল
সর্দি-কাশি, হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগ দূর করতেও সাহায্য করে পান। আয়ুর্বেদে তাই পানের গুরুত্ব অপরিসীম। শ্বাসযন্ত্র ভাল রাখতে পান খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে ভাল।
৪) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
পান পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-হাইপারগ্লাইসেমিক যৌগ, যা রক্তে শর্করার ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে। টাইপ ২ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগীরা সকালে খালি পেটে পান পাতার রস খেয়ে দেখতে পারেন।
৫) মানসিক অবসাদ দূর করে
প্রচণ্ড চিন্তায় বিভ্রান্ত লাগছে? এক টুকরো পান চিবিয়ে দেখুন। পান পাতায় থাকা ফেনোলিক নামক যৌগটি শরীর এবং মনকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে।
৬) ক্ষত সারাতে সাহায্য করে
পান পাতায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এই উপাদান যেকোনো ক্ষত সারিয়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কোনো ক্ষতস্থানে অল্প করে পান পাতার রস দিয়ে তার উপরে আরো কয়েকটি পান পাতা দিয়ে ব্যান্ডেজ করে বেঁধে রাখুন। এমনভাবে এক থেকে দুইদিন থাকলেই দেখবেন ক্ষত একেবারে সেরে গেছে।