ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের বক্ষে থাকা প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন এবং টেকনাফে প্রবল ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপের অন্তত ৩৪০টি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। ভেঙে পড়েছে কয়েকশ’ গাছপালা। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হচ্ছে উত্তরপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও পূর্ব দিকের বেশ কয়েকটি গ্রাম।
রবিবার (১৪ মে) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণকক্ষের প্রধান সমন্বয়কারী ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ। দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেন্টমার্টিনের তিনটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৩৭টির বেশি হোটেল রিসোর্ট ও কটেজে প্রায় ছয় হাজারের মতো স্থানীয় মানুষ অবস্থান করছেন। তাদের বেশির ভাগই শিশু ও নারী।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, “আজ সকালে দ্বীপের পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক ছিল। তবে বেলা দেড়টার পর থেকে অস্বাভাবিক হতে শুরু করে। দুইটার পর প্রবল গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত শুরু হয়, যা চারটা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এতে লোকজনের ঘরবাড়ি, গাছপালা ভেঙে পড়ছে। গাছ পড়ে আহত হয়েছেন ১০-১৫ জন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”
বিকেল পৌনে চারটার দিকে সেন্টমার্টিনে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব চলছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ।
তিনি বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব এখনও সেন্টমার্টিনে চলছে। ঝোড়ো হাওয়ায় সেখানকার ৩০০-৪০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কিছু গাছপালা ভেঙেছে। গাছচাপায় একজন নারীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ওই নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।”
তিনি আরও বলেন, “টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং এলাকাতে কিছু গাছপালা ভেঙেছে। সেখানে এখনও ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া জেলার অন্য কোথাও ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি।”
সেন্টমার্টিন বাজারের ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ (৪৮) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বলেন, “পরিস্থিতি ভয়াবহ। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ঘরবাড়ি, গাছপালা ভেঙে যাচ্ছে। তিন শতাধিক বাড়ি ভেঙে গেছে। গাছপালাও ভেঙেছে শতাধিক। ২০-২৫টি নারকেল গাছ উপড়ে পড়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে যারা অবস্থান করছেন, তারা ভয়ে কান্নাকাটি করছেন।”
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিম বলেন, “সেন্টমার্টিনে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব চলছে। ঘরবাড়ি গাছপালা ভাঙছে। দ্বীপের প্রায় সব লোকজনকে আগেভাগে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে আনা হয়েছে। দ্বীপের লোকসংখ্যা ১০ হাজার ৭০০ জন। এর মধ্যে প্রায় এক হাজার আগেভাগে টেকনাফ চলে গেছেন।”