বার্সেলোনার ইতিহাসের সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি থাকাকালে একের পর এক শিরোপা জেতা ক্লাবটি আর্জেন্টাইন মহাতারকাকে হারিয়ে যেন পথ হারিয়ে ফেলেছিল। ন্যু ক্যাম্পের আকাশে জমা হয় ঘন কালো মেঘ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ব্যর্থতাতো আছেই, টানা তিন মৌসুমে লিগ শিরোপা জিততে পারেনি কাতালান ক্লাবটি। তবে ২০২১ সালে বার্সার দায়িত্ব নিয়েই দলকে বদলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জাভি হার্নান্দেজ।
অবশেষে সাবেক ফুটবলারের হাত ধরেই তিন মৌসুম পর লা লিগা শিরোপা পুনরুদ্ধার করল কাতালান ক্লাবটি। সেটিও আবার চার ম্যাচ হাতে রেখেই। এটি বার্সেলোনার ২৭তম লিগ শিরোপা। আগের ২৬ শিরোপার ১০টিই জিতেছে একবিংশ শতাব্দীতে; মেসির উপস্থিতিতে।
রোববার রাতে এস্পানিওলের মাঠে শিরোপার সুবাস নিয়েই মাঠে নেমেছিল বার্সেলোনা। রবার্ট লেভানদোভস্কির জোড়া গোলে এদিন ৪-২ গোলে জিতেছে জাভির শিষ্যরা। ৩৪ ম্যাচে ২৭ জয় ও ৪ ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৮৫। অন্যদিকে বার্সেলোনার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ সমান ম্যাচে ৭১ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে।
লিগ শিরোপা জয়ের ম্যাচে প্রথম থেকেই বল দখলে একচেটিয়া আধিপত্য দেখায় বার্সেলোনা। ম্যাচে লিড পেতেও বেশি সময় লাগেনি রাফিনহা-লেভাদের। ১১তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে বালদের নেওয়া ক্রস দারুণ নৈপুণ্যে প্রতিপক্ষের জালে জড়ান লেভানদোভস্কি। প্রথম গোলের নয় মিনিট পরই প্রথম গোলে অ্যাসিস্ট করা বালদে নিজেই গোল করেন।
ম্যাচের ৪০ মিনিটে আবারও গোল করেন লেভানডোভস্কি। পাল্টা আক্রমণে ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে দূরের পোস্টে দারুণ পাস বাড়ান রাফিনিয়া। এবারও গোলরক্ষক আগেই বল ধরতে এগিয়ে গিয়ে ব্যর্থ হন, নিখুঁত শটে ফাঁকা জালে বল পাঠান লেভানদোভস্কি।
এরপর দ্বিতীয় হাফের অষ্টম মিনিটে জুলস কুন্দে গোল করে বার্সেলোনাকে চার গোলের লিড এনে দেন। ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং-এর ক্রস থেকে হেড করে গোল করেন কুন্দে। যদিও ম্যাচের ৭৩তম মিনিটে দারুণ নৈপুণ্যে ব্যবধান কমান এস্পানিওলের হাভিয়ের পুয়াদো। প্রতি-আক্রমণে সবাইকে পেছনে ফেলে বক্সে ঢুকেই চিপ শটে আগুয়ান টের স্টেগেনের ওপর দিয়ে বল লক্ষ্যে পাঠান স্প্যানিশ এই ফরোয়ার্ড। প্রথমে অফসাইডের বাঁশি বাজলেও ভিএআরে পাল্টায় সিদ্ধান্ত।
দুই মিনিট যোগ করা সময়ের একেবারে শেষ সময়ে আরেকটি গোল শোধ করে এস্পানিওল। ফের্নান্দো কালেরোর হেড পোস্টে প্রতিহত হওয়ার পর ফিরতি বল গোলমুখ থেকে সহজেই জালে পাঠান হোসেলু। এর পরপরই বাজে শেষের বাঁশি। আর তাতেই বার্সেলোনার বড় জয়ের পাশাপাশি লিগ শিরোপাটাও নিশ্চিত হয়ে যায়। কোচ ও বেঞ্চের খেলোয়াড়রা মাঠে দৌড়ে যান। শুরু হয় বার্সেলোনার শিরোপা উৎসব।