প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করেছি। সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর পরিশ্রম করেছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় প্রতিদিন একাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অথবা সশস্ত্র ব্যক্তির হাতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে স্কুলের শিশুরাও নিহত হচ্ছে। আমার মনে হয়, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তাদের নিজেদের ব্যাপারে আরও মনোযোগী হওয়া। তারা নিজেদের লোকজনের ব্যাপারে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সফররত অবস্থায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ইয়ালদা হাকিম।
শেখ হাসিনা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো তাকে ক্ষমতায় চায় না বলেই বাংলাদেশের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
তিনি বলেন, যে বাহিনীর ওপর তারা (যুক্তরাষ্ট্র) নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা তাদের পরামর্শেই ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। তাদের সব প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছিল। যেভাবে তারা বাহিনীটাকে তৈরি করেছে, তারা তো সেভাবেই কাজ করছে বলে আমার বিশ্বাস। তাহলে কেন তারা এই নিষেধাজ্ঞা দিল? যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের সন্ত্রাস মোকাবিলার জন্য কাজ করছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তখন তারা ভুক্তভোগীদের পক্ষ না নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের পক্ষ নিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে গত ১৪ বছর ধরে গণতন্ত্র অব্যাহত থাকায় দেশে অসাধারণ উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু তারা হয়তো চায় না আমার কাজ অব্যাহত থাকুক, আমি বাংলাদেশের জন্য যেসব উন্নতি করেছি, সেটা তারা হয়তো গ্রহণ করতে পারছে না। এটা আমার অনুভূতি।
সরকারপ্রধান বলেন, বন্দুকযুদ্ধে যেসব হত্যার কথা তারা উল্লেখ করেছে, সেগুলো তারা প্রমাণ করতে পারেনি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব হত্যাকাণ্ড আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করেনি। তারা যেসব অভিযোগ করেছে, আমরা তাদের কাছে প্রমাণ চেয়েছিলাম, তারা দেয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা একটা খেলার মতো। এটা আমার কাছে এখনও পরিষ্কার নয়। কেন তারা আমাদের দেশের প্রতি নিষেধাজ্ঞা দিল?
শেখ হাসিনা বলেন, আমার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পর খুনিরা দায়মুক্তি পেয়েছিল। এমনকি আমি তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করতে পারিনি। সেই সময় তারা (যুক্তরাষ্ট্র) কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বরং একজন হত্যাকারীকে তারা আশ্রয় দিয়েছে।
তিনি বলেন, যারা আমার পরিবারকে হত্যা করেছে, সেই ষড়যন্ত্রকারীরা চায় না এই পরিবারের কেউ ক্ষমতায় আসুক।