Saturday, November 23, 2024

শিল্পকারখানায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ বেড়েছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অন্যান্য উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশেও বেসরকারি খাতের শিল্প-কারখানায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে ম্যানুফ্যাকচারিং ও সেবা শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধির ইতিবাচক ধারা তৈরি হয়েছে।

এ ধারা এগিয়ে নিতে সরকার সম্ভব সব ধরনের নীতি সহায়তা ও প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সারা বিশ্বে চলমান শিল্প বিপ্লবের ধারা শিল্প উৎপাদনে ব্যাপক প্রযুক্তিগত পরিবর্তন এনেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিক টেকনোলজির ব্যবহার শিল্প উৎপাদনের ধারা পাল্টে দিয়েছে এবং পূর্বের তুলনায় উৎপাদনশীলতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে দেশের শিল্পখাত উজ্জীবিত হচ্ছে এবং জ্ঞানভিত্তিক ও স্মার্ট শিল্পায়নের ধারা বেগবান হচ্ছে।

সোমবার (২২ মে) ‘সিআইপি (শিল্প) ২০২১’ হিসেবে নির্বাচিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে সম্মাননা ও সিআইপি কার্ড প্রদান উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘সিআইপি (শিল্প) ২০২১’ হিসেবে নির্বাচিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে সম্মাননা ও সিআইপি কার্ড প্রদান করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। প্রধানমন্ত্রী ‘সিআইপি (শিল্প) ২০২১’ হিসেবে নির্বাচিত শিল্প উদ্যোক্তাদের অভিনন্দন জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘সিআইপি (শিল্প) ২০২১’ হিসেবে নির্বাচিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে সম্মাননা ও কার্ড প্রদানও আমাদের সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও নীতি সহায়তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর মাধ্যমে আমি মনে করি, বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাগণ শিল্পখাতে তাদের সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে কাজে লাগাতে অনুপ্রাণিত হবেন। তারা নিজ নিজ শিল্প-কারখানায় নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে মনোযোগী হবেন এবং উৎপাদিত পণ্যের গুণগতমান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করে রফতানি বৃদ্ধিতেও অবদান রাখবেন। ফলে একদিকে যেমন তারা ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবেন, অন্যদিকে জাতীয় অর্থনীতিও সমৃদ্ধ হবে। দেশে নতুন শিল্প স্থাপন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রয়াস জোরদার হবে বলে আমার বিশ্বাস। শিল্পায়নের চলমান ধারা অব্যাহত রেখে ২০৪১ সাল নাগাদ জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সক্ষম হবো, ইন্শাল্লাহ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৬ সালে তৎকালীন সরকারের শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম, দুর্নীতি দমন ও গ্রাম সহায়তা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী থাকাকালীন সর্বপ্রথম এ অঞ্চলে শিল্প প্রসারে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে শিল্পায়নের গুরুত্ব অনুধাবন করে তিনি ১৯৫৭ সালে ইস্ট পাকিস্তান স্মল এন্ড কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ (ইপসিক) প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাধীনতার পরে তিনি তৃণমূল পর্যায়ে শ্রমঘন শিল্পায়নের ধারা বেগবান করে টেকসই ও সুষম অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে দেশকে এগিয়ে নিতে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।

জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার দেশব্যাপী শিল্পখাতের কার্যকর বিকাশে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবেশবান্ধব ও পরিকল্পিত শিল্পায়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২ প্রণয়ন করা হয়েছে। পাশাপাশি খাতভিত্তিক পৃথক নীতিমালাও তৈরি করা হয়েছে। আমাদের সরকারের গৃহীত শিল্পনীতি ও কর্মসূচির ফলে দেশে টেকসই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পখাত দ্রুত বিকশিত হচ্ছে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্পখাতের অবদান ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিকাশের জন্য আমরা সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। ফলে দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান, নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থসামাজিক অগ্রগতির বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে এগিয়ে আছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে। দেশের মোট জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়ে ৩৭.০৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং ২০২৭ সাল নাগাদ তা ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী ‘সিআইপি (শিল্প) ২০২১’ হিসেবে নির্বাচিতদের সম্মাননা ও সিআইপি কার্ড প্রদান অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

- Advertisement -spot_img

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর