বেড়েই চলেছে তাপমাত্রা, অস্বস্তিকর গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। আগামী ১২ জুনের পরে তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। তবে সংস্থাটি বলছে, বর্ষা না আসা পর্যন্ত এই গরম পুরোপুরি কমার কোনও সম্ভাবনা নেই।
প্রায় দুই সপ্তাহ ধরেই দেশের কোথাও বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে তাপপ্রবাহের এলাকার পরিধি বেড়েই চলেছে। মৌসুমী বায়ু আসার অপেক্ষায় দেশ। ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে বাতাসে আদ্রতার পরিমাণও বেশি থাকে। ফলে তাপমাত্রার পরিমাণ যতটা, তারচেয়েও অনেক বেশি তাপ অনুভূত হচ্ছে মানুষের কাছে। গরমে ঘেমে আরও অস্বস্তিকর হয়ে উঠছে পরিবেশ। সবচেয়ে কষ্টে ভুগছেন শ্রমজীবী মানুষেরা। বিশেষ করে রিকশাওয়ালা, বাসের ড্রাইভার-হেলপার, হকার, নির্মাণ শ্রমিকরা এই তীব্র তাপকে উপেক্ষা করেই কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে তাদের।
গত ২৩ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ৪১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে ঢাকায় ৩৭ দশমিক ৬, রাজশাহীতে ৩৯ দশমিক ৮, রংপুরে ৩৬ দশমিক ৮, ময়মনসিংহে ৩৬, সিলেটে ৩৫, চট্টগ্রামে ৩৪ দশমিক ২, খুলনায় ৩৮ এবং বরিশালে ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্য এলাকায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপপ্রবাহের বিষয়ে বলা হয়, নীলফামারী ও দিনাজপুর জেলাগুলোর ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রংপুর বিভাগের অবশিষ্টাংশসহ ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ এবং ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও বান্দরবান জেলাগুলোর উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, মৌসুমী বায়ু এখনও বাংলাদেশ উপকূল থেকে অনেক দূরে আছে। টেকনাফের উপকূলে আসতে পারে ১২ জুনের দিকে। এরপর চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেটেএ দিকে বৃষ্টি শুরু হতে পারে। এরপর ধীরে ধীরে দেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে এই বৃষ্টি। তবে তার আগে ১২ জুন থেকে তাপমাত্রা কিছুটা কমে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হতে পারে।
তিনি বলেন, এই মৌসুমী বায়ু আসার আগের সময়ে আবহাওয়া এমনই থাকে। বাতাসে আদ্রতা বেশি হওয়ায় মানুষ তাপমাত্রা যা তারচেয়ে বেশি অনুভব করছে। ঘাম হচ্ছে অতিরিক্ত। ফলে ভোগান্তিতেও বেশি।