চারদিকে বেড়েছে গরমের তীব্রতা। এতে সহজেই অসুস্থ হয়ে পরছে শিশু এবং বয়স্কজন।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে ছোট্ট শিশুদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছেন, যা সরকারের যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত।
বিদ্যালয়গামী শিশুদের এ সময়ে দরকার বাড়তি সচেতনতা ও যত্ন,যা ওদের বৃদ্ধি ও বিকাশের পাশাপাশি ওদের সুস্থতা নিশ্চিত করবে।
এই গরমে শিশুদের খাদ্য তালিকা:
শিশুদের খাবারে পানির পরিমাণ অনেক বেশি হতে হবে। খেতে হবে তাজা শাক সবজি,মৌসুমি ফল,দুধজাতীয় খাবার ইত্যাদি। খেয়াল রাখতে হবে শিশু যাতে সুষম পুষ্টি পায়।
বাইরের তৈরি করা খাবার এবং তেলেভাজা খাবার এই সময়ে পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হবে শিশুর সুস্থতার জন্য।
সকালের খাবার:
অধিকাংশ শিশু সকালের খাবারে অনিহা প্রকাশ করে। এতে করে পুষ্টি ঘাটতি থেকে যাবে,তাই সকালের খাবার শিশুর জন্য আকর্ষণীয় ভাবে পরিবেশন করতে হবে। একিসাথে খাবারের উপাদান গুলো হতে হবে শিশুর পছন্দের সব জায়গা থেকে।সকালের নাস্তায় শিশুকে দুধ,কলা,খেজুরের সাথে ওটস দেয়া যেতে পারে।সাথে আলাদা করে ডিম পোচ,যার চারপাশে ঘরে তৈরি সস দিয়ে ডিজাইন করে ফুল বানিয়ে দিতে পারেন।সাথে দিতে পারেন তাজা ফলের জ্যুস, এই সময়ে চারদিকে অনেক ফল সহজলভ্য, এসব ফল দিয়ে শিশুর পছন্দের জ্যুস তৈরি করে একটা স্ট্র দিয়ে দিন,শিশু খুব আগ্রহ নিয়ে খাবে।একিসাথে ওদের পুষ্টিঘাটতি পূরন হবে এবং শিশুরা প্রানবন্ত ও থাকবে।
মধ্যদুপুরের খাবার:সকাল আর দুপুরের খাবারের মাঝে শিশুদের ছোট ছোট খিদে পায় এবং এ সময়েই সাধারণত চিপস চকোলেটের বায়না ধরে।তাই মা বাবাকে সচেতন থাকতে হবে যাতে এই সুযোগে বাইরের খাবার খেয়ে অসুস্থ না হয়ে পরে।
এই ছোট খিদের জন্য ওকে দিতে পারেন ঘরে তৈরি এক পিস কেক কিংবা পুডিং। একটা তাজা ফল,এক গ্লাস লেবুর সরবত।
দুপুরের খাবার:
দুপুরের খাবারে শিশুকে দিতে পারেন ভাত,ডাল,পেপে কিংবা মিষ্টি কুমড়ো দিয়ে ঝোল করে রান্না করা মাছ/মুরগী কিংবা ডিম।
স্কুলগামী শিশুরা সাধারণত সবজি খেতে চায়না,চাই ওদের সব্জিতে তেল মশলা কমিয়ে সস, সামান্য চিনি, সয়াসস দিয়ে তৈরি করে দিন,ওরা আগ্রহ নিয়ে খাবে এবং পুষ্টিঘাটতিও দূর হবে।
বিকেলের নাস্তা:
বিকেলের নাস্তায় রঙিন সব সব্জি দিয়ে স্যুপি নুডলস কিংবা স্যান্ডউইচ করে দিতে পারেন।অথবা বাদাম,ছোট চিকেনের টুকরো,শশা,ডিম সিদ্ধ,টমেটো, আপেল,গাজর ইত্যাদি দিয়ে ঘরে তৈরি সালাদ ও এক গ্লাস দুধ অথবা দই। কিংবা এক বাটি দই চিড়া সাথে নানান ছোট টুকরো করা ফল,যা শরীর কে ঠান্ডা রাখবে,হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে।
রাতের খাবার:
শিশুর রাতের খাবার হবে সহজপাচ্য, যা শিশুকে সুস্থ ও সবল রাখতে সহায়তা করবে।আর তাই রাতের খাবারে শিশুকে দিতে পারেন নরম সিদ্ধ ভাত,পাতলা ডাল,তাজা শাক সব্জি, ঝোল করে রান্না করা দেশি মুরগী ইত্যাদি।
এছাড়াও শিশু যাতে বাইরে রোদে ঘোরাঘুরি না করে সেদিকে নজর রাখতে হবে।
নিয়মিত গোসল করাতে হবে।সারাদিনে পর্যন্ত পানি পান করে কিনা সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
আজকের শিশু আগামীর সম্পদ,সকল শিশু ভালো থাকুক,সুস্থ্য থাকুক,গড়ে উঠুক সুন্দর আগামী।
ইসরাত জাহান : শিশু বিকাশ ও সামাজিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতকোত্তর