Friday, January 10, 2025

বেসরকারি মেডিকেল ভর্তিতে বিশৃংখলা: ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী, উদ্বিগ্ন অভিভাবক

স্টাফ রিপোর্টার: বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির আবেদনে অটোমেশন প্রক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও  অভিভাবকরা। ৬ জুন থেকে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হলে অটোমেশন নিয়ে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।   এক শিক্ষার্থী খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজে আবেদন করলে তাকে প্রথম পছন্দ হিসেবে ব্রাক্ষণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ নির্বাচিত করতে মুঠোফোনে বার্তা আসে

কেবল এই শিক্ষার্থী নয়, বেশিরভাগ আবেদনেই এরকম অসংগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে ।  মেডিকেলে ভর্তিচ্ছু  শিক্ষার্থীরা এমন কান্ড দেখে হতাশ ও অসন্তুষ্ট। তারা বলেন, অটোমেশন পদ্ধতি একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। অটোমেশন নয়, প্রচলিত নীতিমালাই সঠিক। যারা ঢাকার বাইরে থাকেন, তাদের যদি অটোমেশনে ঢাকায় ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে থাকা-খাওয়ার বাড়তি খরচ জোগাড় করতে হয় অভিভাবকদের। অন্যদিকে যিনি ঢাকা থেকে বাইরে যাবেন, তাকেও একই হয়রানির শিকার হতে হবে। তাই প্রচলিত পদ্ধতিতে ভর্তি হলে হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবেন উভয়ই।

আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই পদ্ধতি বহাল থাকলে পছন্দের মেডিকেল কলেজ ও শহরে ভর্তির সুযোগ না পেলে অনেকে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি না-ও হতে পারেন। এতে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়তে পারেন। একইসঙ্গে তাদের স্বপ্ন পূরণ হবে না।

এছাড়া নির্বাচনের বছরে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের এই সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এই বছরই কেন হুট করে এমন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া হলো, এমন প্রশ্ন রেখেশিক্ষার্থীরা প্রচলিত নিয়ম  অনুযায়ী পছন্দের মেডিকেল কলেজে আবেদন করে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আগ্রহী। এক্ষেত্রে  সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।

উদ্বিগ্ন অভিভাবকগণ বলেন, প্রচলিত নীতিমালা অনুযায়ী ভর্তিতে অনিয়ম হলে অবশ্যই ধরা পড়বে। তখন সঠিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারবে অধিদফতর। এর আগে ব্যবস্থাও নিয়েছে তারা। সরকারের নীতিমালা থাকতে অটোমেশন পদ্ধতি চালু করার অর্থ হলো বেসরকারি মেডিকেল শিক্ষায় একটি অসন্তোষ সৃষ্টি করা। তারাও নতুন নিয়মের বদলে প্রচলিত নিয়ম বহাল রাখার পক্ষে।

২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সের ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল কর্তৃক প্রণীত ভৰ্তি নীতিমালা-২০২৩ অনুযায়ী অনলাইনে নির্ধারিত ছকে আবেদন করতে হবে। এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে জটিলতা দেখা দেয়। শুরুতে বলা হয়েছিল, ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে ৩৫ হাজার মেধাক্রম পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ভর্তির আবেদন করার সুযোগ দেয়া হবে। পরে জটিলতা তৈরি হলে উর্ত্তীর্ণ সবাইকে আবেদনের সুযোগ দেয়া হয়। তবে অটোমেশন প্রক্রিয়া এখনও তুলে না নেয়ায় জটিলতা কাটেনি।

সরকারের শেষ সময়ে এ নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে দেশে পড়তে আসা বিদেশি শিক্ষার্থীরা নেতিবাচকভাবে নেবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, মেডিকেলে ভর্তির ক্ষেত্রে সরকারের ঘোষিত একটি নীতিমালা রয়েছে। সেই নীতিমালা অনুযায়ী প্রত্যেকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি কমিটি রয়েছে। ওই কমিটিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ডিন ও সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ থাকেন। এমন একটি গঠিত শক্তিশালী ভর্তি কমিটি থাকতে সেখানে হঠাৎ করে অটোমেশন পদ্ধতি চালুর প্রয়োজন নেই। কারণ, এই কমিটি তো স্বাস্থ্য অধিদফতরের গঠিত। কেউ অনিয়ম করলে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে। অতীতেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

- Advertisement -spot_img

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর