আজ ১৮ জুন রোববার, ‘বিশ্ব বাবা দিবস’। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে বাবা দিবস পালনের প্রচলন হয়। প্রতিবছর জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্ববাসী বাবা দিবস হিসেবে পালিত হয়।
পৃথিবীর সব বাবাদের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকেই শুরু হয় বিশ্ব বাবা দিবস। মায়েদের পাশাপাশি বাবারাও যে তাদের সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল এটা বোঝানোর জন্যই এই দিবসটি পালিত হয়ে থাকে।
বাবার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের এই বিশেষ দিবসে সন্তানরা বাবাদের কোনো না কোনো উপহার দিতে পছন্দ করে। বিশ্বের অনেক দেশে ঘটা করে বাবা দিবস পালন করা হয়। সমাজ, সংস্কৃতি, দেশভেদে বাবা দিবস পালনে কিছুটা ভিন্নতা দেখা যায়। কোনো দেশে সন্তান বাবাকে ফুলের তোড়া ও কার্ড উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়, আবার কোনো দেশে নেকটাই, টুপি, মোজা ও বিভিন্ন স্পোর্টস সামগ্রী উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
বাবারা হলেন সন্তানদের প্রথম ভালোবাসা, জীবনের শেষ নায়ক, যিনি নীরবে শক্তি জোগান। ১৯০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে ভার্জিনিয়ায় কয়লা খনিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারান ৩৬২ জন পুরুষ। যাদের বেশির ভাগই ছিলেন সন্তানের বাবা। ফলে প্রায় এক হাজার শিশু তাদের বাবাকে হারায়। পরের বছর ১৯০৮ সালের ৫ জুলাই পশ্চিম ভার্জিনিয়ার এক গির্জায় একটি স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। মৃতদের সম্মান জানাতে সন্তানরা মিলে এ প্রার্থনা সভার আয়োজন করে। এটিই ছিল বাবাকে সম্মান জানাতে ইতিহাসের প্রথম আয়োজন।
বাবা দিবসকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে সনোরা স্মার্ট ডড নামে এক নারীর অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। ১৯০৯ সালের আগে ওয়াশিংটনে বাবা দিবস বলে কোনো বিশেষ দিন ছিল না। সে সময় স্থানীয় গির্জায় মা দিবস পালনের কথা শোনেন ডড। মা দিবস পালনের রীতি রয়েছে কিন্তু বাবা দিবস পালনের রীতি নেই জেনে তিনি ভীষণ অবাক হন। তিনি বাবা দিবসের স্বীকৃতির জন্য সোচ্চার হয়ে ওঠেন। ডডের মনে হলো, মা দিবসের এত আয়োজন হলে বাবা দিবস কেন বাদ থাকবে। বাবাকে সম্মান জানানোর জন্যও একটা দিন থাকা দরকার। তারপর দীর্ঘ এক বছরের সাধনায় স্থানীয় কমিউনিটিগুলোতে বাবা দিবস পালন করেন ডড। ১৯১০ সালের ১৯ জুন বিশ্বে প্রথমবারের মতো পালিত হয় বাবা দিবস।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পালন করা হয় বিশ্ব বাবা দিবস। জুন মাসের তৃতীয় রোববার বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাবা দিবস পালিত হয়। ১৯ মার্চ বাবা দিবস পালন করে দক্ষিণ আমেরিকা। আর সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম রোববার অস্ট্রেলিয়া ও ফিজিতে বাবা দিবস পালন করা হয়।
তবে দেশ, সমাজ, সংস্কৃতিভেদে বাবা দিবসের দিন কিংবা উপহার ভিন্ন হলেও বাবার প্রতি সন্তানদের ভালোবাসায় কোনো ভিন্নতা নেই। যেখানে প্রকাশভঙ্গী নয়, ভালোবাসা প্রকাশই মূল বিষয়।