১৯৭৫ সালে স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গের এক হাসপাতালে একটি শিশু ছেলের জন্ম হয়েছিল। জন্মের এক সপ্তাহ পর হাসপাতালে মারা যায় শিশুটি। এ সময় মায়ের অজান্তেই শিশুটির লাশ গবেষণার জন্য রেখে দেওয়া হয়। দীর্ঘ ৪৮ বছর পর লিডিয়া রিড নামের মা তার সন্তানের দেহাবশেষ বুঝে পেয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জন্মের এক সপ্তাহ পর লিডিয়া রিডের ছেলে গ্যারি মারা যায়। লিডিয়া দাবি করেন, তিনি যখন গ্যারির মৃত্যুর কয়েকদিন পর তার লাশ দেখতে যান, তখন তাকে অন্য একটি শিশুর লাশ দেখানো হয়। এমনকি তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গ্যারির ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল।
এরপর ময়নাতদন্তের নামে ছেলের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আটকে রাখা হয়েছে বলে সন্দেহ করেন মা লিডিয়া। তার সন্দেহ সত্য ছিল। কয়েক বছর পর তিনি বুঝতে পারলেন, তার ছেলের শুধু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই রেখে দেওয়া হয়নি। পুরো শরীরটিই রেখে দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করতে তিনি আদালতে হাজির হন। এর পরে, আদালতের নির্দেশে ২০১৭ সালে গ্যারির কবর খোঁড়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিশেষজ্ঞরা জানান, ওই কবরে কখনো কোনো মানুষের লাশ ছিল না।
এরপরে তিনি গ্যারির দেহাবশেষ পাওয়ার জন্য লড়াই শুরু করেন, যা হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য রাখা হয়েছিল। এডিনবার্গ রয়্যাল ইনফার্মারি অবশেষে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে তার ছেলের অঙ্গ ও তার শরীরের বাকি অংশ ফিরিয়ে দিতে সম্মত হয়।
স্কটল্যান্ডের হাসপাতালগুলো পরিবারকে না জানিয়ে গবেষণার জন্য কীভাবে বেআইনিভাবে মৃত শিশুদের দেহ সংরক্ষণ এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে রেখে দিত তা লিডিয়া রিডের কারণে প্রকাশ্যে আসে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৭০ থেকে ২০০০ পর্যন্ত স্কটল্যান্ডের হাসপাতালগুলো ছয় হাজার অঙ্গ ও টিস্যু সংরক্ষণ করেছিল। ইংল্যান্ডের লিভারপুলের একটি হাসপাতালে অবৈধভাবে অঙ্গ দান করার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর স্কটল্যান্ডও স্বীকার করেছে, তারা এই কাজ করেছে। সূত্র: বিবিসি