পবিত্র হজ আজ (মঙ্গলবার, ২৭ জুন)। এদিন সৌদি আরবের মক্কা নগরীর ঐতিহাসিক আরাফাত ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। সেলাইবিহীন সাদা কাপড়ে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সারাবিশ্ব থেকে সমবেত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আজ সেখানে হাজির হবেন। বিশ্বের নানা প্রান্তের লাখ লাখ মুসলমান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছেন মক্কায়। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হচ্ছে পবিত্র আরাফাতের ময়দান।
লাখো হাজির ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক’ অর্থাৎ ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার’-এই ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠবে আরাফাতের ময়দান।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) আরাফাত দিবসে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ নামিরা থেকে হজের খুতবা ও নামাজ আদায়ের মধ্যদিয়ে পালিত হবে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। আরাফাতে এ দিনের আনুষ্ঠানিকতাকে মূল হজ বলা হয়।
গতকাল সোমবার (২৬ জুন) সকাল থেকে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। কেউ হেঁটে আবার কেউ বাসে করে মিনায় জড়ো হয়েছেন। মিনা এরই মধ্যে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম তাঁবুর শহরে পরিণত হয়েছে।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইতিহাসে এবারই (২০২৩ সালে) সবচেয়ে বেশি হাজির পদচারণায় মুখরিত হচ্ছে কাবা প্রাঙ্গণ। কাবা ঘর প্রদক্ষিণ করেছেন বিশ্বের ১৬০টি দেশ থেকে আসা লাখ লাখ হাজি।
ইতিহাসের সবচেড়ে বড় হজ হওয়ার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এ বছর, আমরা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হজ প্রত্যক্ষ করছি।’
গত রোববার (২৫ জুন) বিকেলে হজযাত্রীরা মক্কায় কাবাঘর তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ শুরু করেন। ইহরাম বেঁধে সেলাইবিহীন সাদা কাপড় পরে লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনির মাধ্যমে শুরু হয় হজের আনুষ্ঠানিকতা। সোমবার (২৬ জুন) সকাল হজযাত্রীরা রওনা হন মিনার দিকে।
মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে মিনার দূরত্ব আট কিলোমিটারের মতো। এখানে খোলা আকাশের নিচে ২৫ লাখ বর্গমিটার জায়গাজুড়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লক্ষাধিক তাঁবু টানানো হয়েছে।
সোমবার সারাদিন ও দিবাগত সারারাত মিনায় অবস্থান করবেন হজযাত্রীরা। এ সময় সেখানে মহান আল্লাহর মেহমানরা ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন। এরপর ফজরসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পর তারা মিনা থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ঐতিহাসিক আরাফার ময়দানে যাবেন।
মিনা থেকে আরাফার ময়দানের দূরত্ব সড়কপথে ১৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার। হজযাত্রীদের কেউ হেঁটেই এই দীর্ঘপথ পাড়ি দেবেন। আবার কেউ বাসে করেই যাবেন।
এদিকে এবার হজের মৌসুমটা পড়েছে তীব্র গরমের মধ্যে। জানা গেছে, হাজিদের প্রায় ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হচ্ছে। এই গরমে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে যেন তাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায় সেজন্য ৩২ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী ও পর্যাপ্ত অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।