ফ্রান্সের জাতীয় দিবসে (বাস্তিল দিবস) সম্মানিত অতিথি হিসেবে অংশ নেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ১৪ জুলাই বাস্তিল দিবসের প্যারেডে যোগ দেবেন তিনি।
ভারত-ফ্রান্স কৌশলগত অংশীদারিত্বের ২৫ বছর পূর্ণ হলো এ বছর। এ উপলক্ষেই ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমন্ত্রণের বিষয়ে হিন্দি ও ফরাসি ভাষায় টুইট করে মোদিকে স্বাগত জানিয়েছেন ম্যাক্রোঁ।
ঐকতানের ২৫ বছর
১৯৯৮ সালে ভারত দ্বিপাক্ষিকভাবে ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়। এ বছর দুদেশের কৌশলগত অংশীদারিত্বের ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। এ সময়ের ব্যবধানে ভারত ও ফ্রান্স বেশ কয়েকটি ইস্যুতে একজোট হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তাদের কৌশলগত সম্পর্ক আরও প্রসারিত করতে আগ্রহী। গত ২৫ বছর প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, মহাকাশ এবং বেসামরিক পারমাণবিক সহযোগিতা ছিল ভারত-ফ্রান্স কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রধান স্তম্ভ।
একই পথের পথিক!
২০১৬ সালে তৎকালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনে প্রধান অতিথি ছিলেন এবং প্রজাতন্ত্র দিবসে ভারতীয় সেনাদের পাশাপাশি একটি ফরাসি সামরিক দলও পদযাত্রা করেছিল।
২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো প্রথম বিদেশি দেশ ছিল ফ্রান্স। ২০১৭ সালে প্যারিস সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি দুই বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্সের প্রতিরক্ষায় নিহত ভারতীয় সেনাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ বছর ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২৬৯ সদস্যের একটি তিন-বাহিনী কন্টিনজেন্ট বাস্তিল দিবসের কুচকাওয়াজের সময় ফরাসিদের সঙ্গে পদযাত্রা করবে।
সন্ত্রাসবাদের সমালোচনা
ভারতের প্রতি ফ্রান্সের অবিরাম সমর্থনের একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত হলো সন্ত্রাসবাদের ব্যাপক সমালোচনা। ২৬/১১ মুম্বাই হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার বিষয়ে জাতিসংঘ এবং এফএটিএফের মতো অন্যান্য সংস্থায় ভারতের দেওয়া প্রমাণকে সমর্থন করেছে প্যারিস।
২০১১ সালের মে মাসে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের সমালোচনা করে ফ্রান্স পাকিস্তানের কাছে অস্ত্র বিক্রি সাময়িকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা দেয়।
জোরালো অর্থনৈতিক সম্পর্ক
ভারতের বাজারে নিজেদের উপস্থিতি বাড়ানোর প্রতি বেশ আগ্রহ আছে ফরাসিদের। সেই লক্ষ্যে ২০২০ সালে বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ‘ফাস্ট ট্র্যাক মেকানিজম’ চালু করা হয়।
ফ্রান্স থেকে ভারত সাধারণত বিমান, মহাকাশযান, পারমাণবিক চুল্লি, বয়লার, এবং যান্ত্রিক সরঞ্জাম আমদানি করে থাকে। আর ভারত থেকে ফ্রান্সে রফতানি করা হয় খনিজ তেল, বিটুমিনাস পদার্থ এবং যান্ত্রিক সরঞ্জাম।
এছাড়াও ভারতের মেক ইন ইন্ডিয়া ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশ সহযোগী ভূমিকা পালন করছে ফ্রান্স।