ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা চলতি বছরে একদিনে সর্বোচ্চ। নতুন মৃতদের মধ্যে ঢাকা সিটির ১৭ জন এবং বাইরের দুজন। এ ছাড়া একই সময়ে ১ হাজার ৭৯২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বুধবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে ঢাকার ৯২২ জন এবং ঢাকার বাইরের ৮৭০ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৫ হাজার ৫৫২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৫ হাজার ৭৯২ জন। সুস্থ হয়েছেন ২০ হাজার ৯৪ জন। মারা গেছেন ১৪৬ জন। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ১১৩ জন এবং ঢাকা সিটির বাইরে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু এখন আর বর্ষা মৌসুমের আতঙ্ক নয়। ফলে এর ভয়াবহতা বাড়ছে। এটি মোকাবিলায় দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর তৎপরতার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও ব্যাপকভাবে সচেতন হতে হবে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ জুন মাস থেকে শুরু হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর মে মাস থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একই সঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। তাহলে হয়তো রক্ষা পাব, না হলে ডেঙ্গু এবার মহামারি আকার ধারণ করতে পারে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ইমেরিটাস অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, শক সিন্ড্রোমের কারণে বেশি মানুষ মারা যেতে পারে। তাই অবহেলা না করে ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্রই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বছরব্যাপী নানা উদ্যোগ নিলেও কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশা নিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৮১ জন।