প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সরকার গত সাড়ে ১৪ বছরে মৎস্যখাতে উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেছে। ফলে মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে সোমবার (২৪ জুলাই) দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “প্রতি বছরের মতো এবারও জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে দেশের সব মৎস্যজীবী, মৎস্যচাষিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে মনে করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকারের নেওয়া পরিকল্পনা ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর সফল বাস্তবায়নের ফলে ২০২১-২২ অর্থবছরে মৎস্য উৎপাদন হয়েছে ৪৭ দশমিক ৪৯ লাখ মেট্রিকটন। যা ২০০৫-০৬ সালের মোট উৎপাদনের ২৩ দশমিক ২৯ লাখ মেট্রিকটন থেকে দ্বিগুণেরও বেশি। আমাদের অভ্যন্তরীণ মৎস্য সম্পদের পাশাপাশি সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ একটি অপার সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আমরা সমুদ্র বিজয়ের মাধ্যমে সূচিত সুনীল অর্থনীতির বিকাশ ও আমাদের সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ নীতিমালা, ২০২২ ও সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা, ২০২৩ প্রণয়ন করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশিয় সাফল্যের পাশাপাশি মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশের সাফল্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও স্বীকৃত। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার রিপোর্ট ২০২২ অনুযায়ী, বিশ্বে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য আহরণে বাংলাদেশ তৃতীয়। বদ্ধ জলাশয়ে মৎস্য উৎপাদনে পঞ্চম। সামুদ্রিক ও উপকূলীয় ক্রাস্টসিয়া উৎপাদনে অষ্টম ও ফিনফিস উৎপাদনে ১১তম স্থানে রয়েছে। ইলিশ আহরণে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে প্রথম ও তেলাপিয়া উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ ও এশিয়ায় তৃতীয়।’
‘বাংলাদেশের ইলিশ ও বাগদা চিংড়ি জিআই পণ্য হিসেবে ইতোমধ্যে স্বীকৃতি পেয়েছে যা আমাদের জন্য গর্বের’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য আজ ৫২টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। বিশ্ববাজারে আর্থিক মন্দাবস্থা থাকা সত্ত্বেও ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬৯ হাজার ৮৮১ মেট্রিকটন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে আয় হয়েছে চার হাজার ৭৯০ কোটি টাকা। আমাদের রূপকল্প-২০৪১ অনুযায়ী মৎস্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন অর্জনে মৎস্য খামার যান্ত্রিকীকরণ, প্রযুক্তি ব্যবহার, উপকূলীয় মৎস্য চাষ সম্প্রসারণ এবং নবায়নযোগ্য সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট সবাই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন।’
প্রধানমন্ত্রী ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ’ উপলক্ষে আয়োজিত সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।