আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) রাজধানীতে সমাবেশ ডেকেছে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। এসব সমাবেশ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা করছেন অনেকে। তাই নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আজকের (বুধবার) মধ্যে জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে চলে যেতে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন নির্দেশনা দেন তিনি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন বিরোধী দল যেখানে কর্মসূচি পালন করছে সেখানে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) তাদের ডাকা কর্মসূচিতে যদি আন্দোলনরত শিক্ষকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় তাহলে তার দায়িত্ব কে নেবে? এ দায়িত্ব কি আন্দোলনরত শিক্ষকদের নেতৃবৃন্দ নিতে পারবেন? কাজেই আমি বলছি, আজকের মধ্যে তারা যেন শ্রেণিকক্ষে ফিরে যান।’
তিনি বলেন, আমরা তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ নিয়ে কাজ শুরু করেছি। এরপর যদি তাদের কোনো চাওয়া থাকে তাহলে পরবর্তীতে অবশ্যই আসতে পারেন। কিন্তু আগামীকাল এখানে একটা সমস্যা হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। এ অবস্থায় শিক্ষকদের এখানে এনে যারা বসিয়ে রেখেছেন তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন।
‘তারা শিক্ষকদের জিম্মি করে অন্য কোনো কিছুতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এ অপচেষ্টা বন্ধ করা উচিত। এখানে শিক্ষকনেতারা আছেন, তাদের উচিত শিক্ষকদের নিরাপত্তার স্বার্থে বাড়ি ফিরিয়ে নেওয়া। তাদের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হয় এমন কিছু করা শিক্ষকনেতাদের উচিত নয়।’
অনুপস্থিত শিক্ষকদের প্রতি কঠোর হওয়ার নির্দেশনা
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার যথাযথ পরিবেশ এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিতে কঠোর নজরদারির নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। নির্দেশনায় অনুপস্থিত শিক্ষক কর্মচারীদের ব্যাপারে গর্ভনিং বডি ও প্রধান শিক্ষককে কঠোর হতে বলা হয়েছে।
বুধবার (২৬ জুলাই) ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার স্বাক্ষরিত ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে’ এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকার অধীন স্কুল-কলেজের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সংশ্লিষ্ট সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণপূর্বক জানানো যাচ্ছে যে, স্কুল-কলেজের শিক্ষার যথাযথ পরিবেশ নিয়মিত ক্লাস এবং নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে শিক্ষক-কর্মচারীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত থেকে পাঠদান কার্যক্রমে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কঠোরভাবে নজরদারি করার অনুরোধ করা যাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশের শিক্ষার মান উন্নয়ন ও শিক্ষার পরিবেশ সমুন্নত রাখার বৃহত্তর স্বার্থে বিষয়টি ‘অতীব জরুরি’। এ ক্ষেত্রে ব্যর্থতার সব দায়ভার সংশ্লিষ্ট গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সদস্যদের ওপর বর্তাবে। এ ব্যাপারে সবার একান্ত সহযোগিতা কাম্য।
এর আগে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি নিশ্চিতে একাধিকবার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এমনকি দৈনিক অনুপস্থিত শিক্ষকদের তালিকা পাঠানোর নির্দেশনাও দিয়েছে মাউশি।
উল্লেখ্য, গত ১১ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা। আজ বুধবার ১৬তম দিনেও তাদের কর্মসূচি অব্যাহত আছে।