একজন সাদাসিধে বাঙালি নারীই আদর্শ ও দৃঢ়তায় হয়ে ওঠেন অসাধারণ। নেপথ্যে থেকে নিয়েছেন বাঙালির আন্দোলন-সংগ্রামের ঐতিহাসিক মুহূর্তে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুগিয়েছেন অনুপ্রেরণা ও সাহস। তিনি হচ্ছেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। আজ ০৮ আগস্ট এই মহিয়সী নারীর ৯৩তম জন্মবার্ষিকী।
বঙ্গমাতা ছিলেন শক্তির পেছনে রুধির ধারার মতো গোপন ও মহানায়কের মহীরুহ হয়ে ওঠার আড়ালের এক মহামানবী। টুঙ্গিপাড়ার নিভৃতপল্লীর রেনু ইতিহাসের পালাবদলে হয়ে ওঠেন বঙ্গমাতা। তিনি জেল-জুলুম আর রাজনৈতিক সংকট-দুর্দশায় দূরে থাকা বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত ত্রাতা।
শেখ ফজিলাতুন্নেছা শিশুকালেই বাবা-মাকে হারান। কিশোরী বয়সের চপলতায় ঘর বাঁধেন শেখ মুজিবের সঙ্গে। বঙ্গবন্ধু যখন স্বাধীনতাকামী এই জনপদের মুক্তির সংগ্রামে সক্রিয়, সেই সময় নীরবে বিচক্ষণ সংগঠকের ভূমিকায় ছিলেন বঙ্গমাতা। দক্ষ হাতে সংসার সামলানোর পাশাপাশি দলও সামলেছেন তিনি।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তির প্রস্তাব দেয়া হলে তা প্রত্যাখ্যান করেন বঙ্গমাতা। যা পরে হয়ে ওঠে মুক্তি সংগ্রামের এক নির্নায়ক সিদ্ধান্ত। ৬ দফা আন্দোলন ও ৭ মার্চের ভাষণের আগেও বঙ্গবন্ধুকে সুপরামর্শে আশ্বস্ত করেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা।
ঘাতকের নির্মম বুলেটে যখন থেমে গেল বঙ্গমাতার প্রাণ, তার কিছুক্ষণ আগে বিদায় নেন বঙ্গবন্ধুও। দু’জনের সারাজীবন একসঙ্গে চলার শপথ যেন বেঁচে রইলো অন্যপারে।