প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার মা সবসময় বাবার পাশে থাকতেন। তিনি বাবাকে বলতেন, ‘রাজনীতি করো আপত্তি নেই, কিন্তু পড়াশোনা করো’। আমার দাদাও আব্বাকে বলেছিলেন, ‘যে কাজই করো পড়াশোনাটা করতে হবে’। আমি জানি না আব্বা দুইটা বছর একটানা জেলের বাইরে থেকেছিলেন কি না। কিন্তু মাকে দেখেছি কখনও হতাশ হতেন না। সবসময় তিনি ঘর-সংসারসহ সবকিছু সামাল দিতেন।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত ‘বঙ্গমাতা পদক প্রদান’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৬৮ সালের ১৭ জানুয়ারি হঠাৎ আব্বাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং জেলগেটেই আবার গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জেলগেট থেকে সোজা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে বন্দি করে রাখা হয়। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বাবাসহ ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। সেই সময় ছয়টা মাস অর্থাৎ মামলা চলাকালীন সময়ের আগে আমরা জানতে পারিনি বাবা কোথায় আছেন, বেঁচে আছেন কি না কিচ্ছু জানতে পারিনি আমরা। সেই জানুয়ারি মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত….আমরা তখনই জানতে পারলাম প্রথম যখন কোর্ট বসে, সেদিন আব্বা যে বেঁচে আছে আমরা দেখলাম। আমার মা কিন্তু ভেঙে পড়েননি, তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন বাবার খোঁজ করতে। এমনকি মাকেও পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ওই মামলায় মাকে জড়ানোরও চেষ্টা করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, আমার মায়ের অদ্ভুত স্মরণশক্তি ছিল। তিনি যে কথা একবার শুনতেন বা জানতেন তা সবসময় মনে রাখতেন। আমরা মাকে বলতাম, জীবন্ত টেপরেকর্ডার। সবসময় আমাদের বাড়ি গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকত। গোয়েন্দাদের নজর এড়িয়ে আমার মা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে নেতাদের সঙ্গে কথা বলতেন এবং নির্দেশনা দিতেন। ৭ জুনের হরতাল সম্পূর্ণ আমার মা সফল করেছেন।