বিদেশিরা বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গল চায় না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, তারা এখানে অশান্তি চায়। অশান্তির ফলে দেশ যদি দুর্বল হয়, তাতে তাদের সুবিধা হয়। ওদের ভেলকিতে আপনারা পা দেবেন না।
বুধবার (৯ আগস্ট) বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্ট আয়োজিত ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়নের গতি-প্রকৃতি’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়ন দেশের মানুষ করবে। আমরা আওয়ামী লীগ আমাদের জনগণকে বিশ্বাস করি। জনগণের রায়েই আমাদের অবস্থান হবে। বিদেশিরা কে কী বলল, সেটির কোনো গুরুত্ব নেই।
তিনি বলেন, গত ছয় মাসে দেশে ৬০টি নির্বাচন হয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আরও ২২টি নির্বাচন রয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ইউএন স্টেট ডিপার্টমেন্ট, ইউএন ইউএসএ ডিপার্টমেন্টে ও ইউএনএ— তাদের প্রতিদিন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে হয়। কিন্তু এই যে আমি শ’খানেক নির্বাচনের কথা বললাম, তাদের এ নিয়ে কোনো কথা নেই। বিদেশি দেশগুলোর মূল আলোচনার বিষয় হলো অর্থনীতি। আপনারা পারলে বাংলাদেশের এ ইস্যু নিয়ে কথা বলুন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের গতি প্রকৃতি কীভাবে ধরে রাখা যায় সেদিকে আলোকপাত করা উচিত। দুনিয়ার অনেক জায়গায় নির্বাচন হয় কিন্তু সেখানে এ ধরনের কথাবার্তা হয় না। ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত আমাদের অর্থনীতি ও সামাজিক অবস্থা দিকে তাকালেই দেখা যাবে আমাদের অবস্থা কী ছিল। তা দেখলেই আপনারা বুঝতে পারবেন বাংলাদেশের জন্য কে উপযুক্ত। জাতির সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি দেখলে ভবিষ্যতে মানুষ কাকে নির্বাচিত করবে সেটি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা উন্নয়নের পথ আগলে রাখে মন্তব্য করে ড. মোমেন বলেন, যেসব দেশ উন্নত, সেসব দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে। যেসব দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নেই তারা ইরাক ও লিবিয়ার মতো মারামারি-কাটাকাটি করছে। আমরা দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা চাই। তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত দেশ রেখে যেতে পারব। অন্যথায় যদি বিএনপি-জামায়াত নির্বাচিত হয় তাহলে বাংলাদেশ ফের ৬৪টি জেলায় একযোগে বোমা হামলা, জঙ্গিবাদ ও গ্রেনেড হামলাসহ নানা নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে। আবারও বাংলাদেশ দুর্নীতিতে প্রথম হবে।
এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. উত্তম কুমার বড়ুয়া।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক টি এইচ এম জাহাঙ্গীর, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান লিটু, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিল্টন বিশ্বাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ফারুক শাহ ও দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার সম্পাদক ড. খান আসাদুজ্জামান।