Sunday, November 24, 2024

কমছে সবজির দাম, স্বস্তি নেই নিত্যপণ্যে

বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতের সবজি। ফলে গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমেছে বিভিন্ন সবজির দাম। ডিম, আলুসহ কিছু পণ্যের দামও কমেছে। দামের এ নিম্নমুখী প্রবণতায় খুব বেশি খুশি নন সাধারণ ক্রেতারা। দাম সামান্য কমলেও তা নাগালের বাইরে। এদিকে চাল, ডাল চিনিসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলছে। ফলে স্বস্তি নেই বাজারে।

শুক্রবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল, খিলগাঁও, মতিঝিল এজিবি কলোনি, মালিবাগ রেলগেট, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

শান্তিনগর বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, পণ্যের দাম তো বেশি। আমাদের তো কিছু করার নেই। পাইকারি বাজারে দাম বেশি, তাই আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

শরিফ আহমেদ পরিবার নিয়ে থাকেন রাজধানীর মগবাজার রেলগেট। চাকরি করেন মগবাজারে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। মালিবাগ রেলগেট বাজারে কথা হয় তার সঙ্গে।

আগের তুলনায় শাক-সবজির দাম কিছুটা কমছে। তবে চাল, চিনি, আদা, রসুনসহ অন্যান্য পণ্যের দাম আরও বেড়েছে। বাজারে গেলে মাথায় কাজ করে না। খুব অস্বস্তি লাগে।

তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মোটা চালের দাম। যা সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের পণ্য। আমরা এখন অসহায়। বলার কোনো জায়গা নেই। দাম কমলেই কি? আর কমবেই না কতটুকু। দাম তো আগেই তিন গুণ বেড়ে আছে। এখন দুই-চার টাকা কমলে তো লাভ নেই। আমাদের মতো ভোক্তাদের নাভিশ্বাস।

শরীয়তপুরের আল মামুন মতিঝিলে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। পরিবার নিয়ে থাকেন সেগুনবাগিচায়। শুক্রবার ছুটির দিনে রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারে এসে বিক্রতার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন।

আমরা চাকরিজীবী মানুষ। আয় সীমিত। চাইলেই ইচ্ছেমতো কিছু কিনতে পারি না। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। এভাবে চলা কঠিন, সংসার চালাতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে। আগে ১০০ টাকায় যে পরিমাণ পণ্য কেনা যেত, এখন আর তা পারা যায় না। আয় বাড়ে না, ব্যয় ঠিকই বাড়ছে।

এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, মৌসুম শেষে বাজারে আলুর সরবরাহ কম। ভারত থেকে আলু আমদানি হচ্ছে। তবে যে পরিমাণে আলু এসেছে, তা চাহিদার তুলনায় খুব সীমিত। দাম কিছুটা কমলেও নাগালের মধ্যে আসেনি। ফলে বাজারে তেমন প্রভাব পড়ছে না। আর ডিম আমদানি কারণে দাম কিছুটা কমছে। তবে তা চাহিদার তুলনায় খুবই কম।

তারা আরও বলছেন, বর্তমানে রাজধানীর বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। যা গত এক সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি কমেছে ১০ টাকা। তবে অন্যসময় বছরজুড়ে আলুর দাম থাকে ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ আলুর দাম কেজিতে ১০ টাকা কমলেও তা এখনও স্বাভাবিক দামের চেয়ে দ্বিগুণ।

হাতিরপুল বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন বলেন, খুচরা বাজারে এখন প্রতি পিস ডিম ১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকায়। ডিমের হালি দুই সপ্তাহ আগেও ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়।

এদিকে বাজারে ডিমের সঙ্গে ব্রয়লার মুরগির দামও কিছুটা কমেছে। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। এ ছাড়া ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে সোনালি মুরগির কেজি।

অন্যদিকে গত সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দাম কিছুটা কমেছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, ইলিশ, শিং, পাবদা, চিংড়িসহ বিভিন্ন মাছের দাম কেজিপ্রতি কমেছে ১০ থেকে ৪০ টাকা। তবে ফের বাড়ছে চিনির দাম। প্রতিকেজি চিনিতে গড়ে বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।

তবে স্বস্তি মিলছে শাক-সবজিতে। অধিকাংশ সবজি ৫০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। গত সপ্তাহে বেশির ভাগ সবজির দাম ছিল ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। আর দুই সপ্তাহ আগে এক মুঠো লাল শাক ২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আজ তা ১০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

- Advertisement -spot_img

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর