অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বন্দী বিনিময় ও যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। কাতারের মধ্যস্থতায় স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে চারদিনের এ যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে ৩৯ জন কারাবন্দীকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। অন্যদিকে ১৩ জন ইসরায়েলিসহ মোট ২৪ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস।
শুক্রবার কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরা।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামাসের মুক্তি দেয়া ২৪ জনের মধ্যে ১৩ জন ইসরায়েলি, তাদের মধ্যে তাদের মধ্যে ৪ শিশু, তাদের ৪ জন মা এবং ৫ জন বয়স্ক নারী রয়েছেন। এ ছাড়া ১০ জন থাইল্যান্ড এবং ১ জন ফিলিপাইনের নাগরিক। গাজা ও মিসরের সীমান্তপথ রাফাহ বর্ডার ক্রসিংয়ে মিসরের সরকার এবং আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট কমিটির (আইসিআরসি) প্রতিনিধিদের কাছে এই জিম্মিদের হস্তান্তর করা হয়েছে।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনি প্রিজনার ক্লাব এনজিও’র প্রধান কাদুরা ফারেস বলেন, পশ্চিম তীর থেকে ৩৩ জন ফিলিস্তিনিকে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির কাছে তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া বাকি ছয় জনকে জেরুজালেম থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া চারদিনের যুদ্ধবিরতিতে মোট ৫০ জন ইসরায়েলিকে মুক্তি দেবে হামাস। অন্যদিকে ১৫০ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। এছাড়াও বন্দি মুক্তি নিয়ে আরও একটি প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। অতিরিক্ত ১০ জন বন্দিকে মুক্তি দিলে তার বিনিময়ে গাজায় আরও একদিন যুদ্ধবিরতি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
এরআগে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে প্রথমবারের মতো সমঝোতায় যেতে রাজি হয় ইসরায়েল ও হামাস। বুধবার কাতারের মধ্যস্থতায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি ও বন্দি মুক্তিতে সম্মত হয় দুপক্ষ।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারপর থেকেই গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গত দেড়মাস ধরে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১৪ হাজার ৮০০ জন ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ১০ হাজারের বেশি শিশু ও নারী রয়েছেন। এছাড়া কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।