Sunday, November 24, 2024

রাতারাতি পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি

নিজেদের দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে ভারত সরকার আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেয়। ঘোষণা দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পার না-হতেই এক লাফে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ৬৫ টাকা। সঙ্গে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দামও। ধারণা করা হচ্ছে ২৫০ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে দাম।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভারতীয় পেঁয়াজ ১৭০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ১৮০ থেকে ২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে পাড়ার দোকানগুলোতে।

শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। এ ছাড়াও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ টাকা। তবে শুক্রবার সন্ধ্যার পর পেঁয়াজের দামে ভেলকি দেখান বিক্রেতারা।

রাজধানীর হাতিরপুল বাজারে কথা হয় ক্রেতা ফারুক মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, গতকালও (শুক্রবার) ভারতীয় পেঁয়াজ ১৩০ টাকা ছিল, আজকে সেই পেঁয়াজ ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। আরেক ক্রেতা আজাদ হোসেন জানান, নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে এবং দাম কমবে, এ জন্য আগেভাগে পেঁয়াজ কিনেও রাখিনি। এখন যে অবস্থা, তাতে তো মহামুশকিল। খুচরা বিক্রেতারা অভিযোগ করছেন, পাইকারি ব্যবসায়ীরা রাতারাতি একযোগে দাম বাড়িয়ে দেওয়ার কারণে বাজারে প্রভাব পড়েছে।

উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রে অসময়ের বৃষ্টিপাতে ফসলের ক্ষতি হওয়ায় ভারতে পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ক্রিসিল এমআইঅ্যান্ডএ রিসার্চের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে পেঁয়াজের দাম নভেম্বরে ৫৮ শতাংশ বেড়েছে। এতে বেড়েছে খাবারের দামও।

এ পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়েছে দেশটির সরকার। তবে এর আগে দাম স্থিতিশীল রেখে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়াতে গত ২৯ অক্টোবর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানিতে ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য প্রতি টনে ৮০০ ডলার আরোপ করা হয়েছিল।

এদিকে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও শর্তসাপেক্ষে পেঁয়াজ রপ্তানি করা যাবে বলে জানিয়েছে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়। বলা হয়, কোনো দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করতে হলে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট দেশের আবেদনের ভিত্তিতে অনুমোদন মিললে তবেই হবে রপ্তানি।

শর্ত সম্পর্কে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় জানায়, নতুন এই বিজ্ঞপ্তি জারির আগে জাহাজে লোড করা পেঁয়াজ রপ্তানি করা যাবে। এ ছাড়া বিজ্ঞপ্তি জারির আগে শিপিং বিল দাখিল করা হয়েছে এবং পেঁয়াজ লোড করার জন্য জাহাজগুলো ইতোমধ্যে বার্থ করেছে বা পৌঁছেছে এবং ভারতীয় বন্দরে নোঙর করেছে এমন তথ্য নিশ্চিতের পর রপ্তানির অনুমতি মিলবে। আর বিজ্ঞপ্তি জারির আগে পেঁয়াজের চালান কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে ও তাদের সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়েছে বা চালানগুলো রপ্তানির জন্য কাস্টমস স্টেশনে প্রবেশ করেছে, এমন তথ্য নিশ্চত সাপেক্ষে ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে।

তবে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নতুন এ নিষেধাজ্ঞার ফলে আগামী জানুয়ারিতে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দামে বড় ধরনের পতনের শঙ্কা করছেন দেশটির ব্যবসায়ী ও কৃষকরা।

- Advertisement -spot_img

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর