কুয়েতের আমির শেখ নওয়াফ আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহ ৮৬ বছর বয়সে মারা গেছেন।
কুয়েতের রাজকীয় আদালতের এক বিবৃতির বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘খুব দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি আমির শেখ নাওয়াফ আল-আহমাদ আল-সাবাহ আর আমাদের মধ্যে নেই। তার মৃত্যুতে আমরা শোক প্রকাশ করছি … ।’
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কুনা জানিয়েছে, গত মাসে জরুরি স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে আমির শেখ নওয়াফকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে কুয়েতের তৎকালীন আমির ও তার সৎ ভাই শেখ সাবাহ আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবাহর মৃত্যুর পর দেশটির আমির হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন শেখ নওয়াফ।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে অত্যন্ত সুসম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন তৎকালীন কুয়েতের আমির কুয়েত সাবাহ আল-সালিম আল-সাবাহ।
এছাড়াও ১৯৯১ সালে ইরাক কুয়েত আক্রমণ করার পরে, সৌদি আরবকে রক্ষার জন্য জাতিসংঘের নেতৃত্বে পরিচালিত অপারেশন ডেজার্ট শিল্ডের জন্য সৈন্য প্রেরণ করেছিল বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক জোটের অংশ হিসাবে বাংলাদেশও প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধে লড়াই করেছিল। যুদ্ধের পরে ২০১৬ সালের মধ্যে, ‘অপারেশন পুনর্গঠন কুয়েত’ এর অধীনে উপসাগরীয় যুদ্ধে ইরাক বাহিনীর রেখে যাওয়া ল্যান্ড মাইন পরিষ্কার করতে ৭২৮ জন বাংলাদেশী সেনা মারা গিয়েছেন এবং আরও ১৫২ জন আহত হয়েছিল।
অন্যদিকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও সুসম্পর্ক রয়েছে বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে। ২০০০ সালে কুয়েতে আনুমানিক ২০ লাখ অভিবাসী বাংলাদেশী শ্রমিক ছিল। তবে ২০০৮ সালে বাংলাদেশী বেসরকারী নিয়োগ সংস্থাগুলো নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে কুয়েত বাংলাদেশী শ্রমিকদের আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে কুয়েত আবার ৭ বছরের নিষেধাজ্ঞার পরে আবারও বাংলাদেশী শ্রমিকদের প্রবেশের অনুমতি দেয়। ২০১৪ সালের মধ্যে মোট বাংলাদেশী অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা কমে ১৯ লাখে নেমে এসেছিল। ২০১৬ সালের মার্চে এ উভয় দেশ প্রতিটি দেশের কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের প্রবেশ ভিসা ছাড়াই যাতায়াতের অনুমতি দেওয়ার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ফলে ২০১৬ সালের মধ্যে অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা আবারও ২০ লাখে পৌঁছায়।
এছাড়াও ২০১৬ সালের মে মাসে কুয়েত সরকার বাংলাদেশ সরকারকে বাংলাদেশে একটি তেল শোধনাগার স্থাপনে সহায়তা করতে সম্মত হয়।