Thursday, January 16, 2025

নিষেধাজ্ঞা উঠল, হিজাব পরতে পারবে কর্নাটকের শিক্ষার্থীরা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতের কর্নাটকে সরকারি স্কুল থেকে গত বছর হিজাব নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। দক্ষিণ ভারতের কংগ্রেসশাসিত এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া শুক্রবার এ ঘোষণা দিয়েছেন।

এক অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে সরকারের মনোভাবের কথা জানানোর পরই তিনি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে তা ঘোষণা করেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি ইতোমধ্যে সরকারি কর্তাদের বলেছি— ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিতে।

আরও পড়ুন: গাজা ইস্যুতে যুদ্ধবিরতি বাদ, যে প্রস্তাব পাশ হলো জাতিসংঘে

বিজেপি সরকারের আমলে ২০২২ সালে রাজ্যের সরকারি স্কুলের শ্রেণিকক্ষে মুসলমান শিক্ষার্থীদের হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যে অশান্তি ও উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। বিষয়টি গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত।

মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ওই অনুষ্ঠানে বলেন, কে কী পরবেন, কে কী খাবেন, তা একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। ব্যক্তিগত পছন্দ অনুযায়ী তা ঠিক করা হয়। সরকার কেন ব্যক্তির সেই অধিকারে নাক গলাবে? যার যা খেতে ইচ্ছা করে, সে তাই খাবে। যার যা পরতে ইচ্ছা করবে, সে তাই পরবে। আমি ধুতি পরি, কেউ প্যান্ট পরে। এতে কার কী বলার থাকতে পারে? অন্যায়ই–বা কোথায়?

মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বিজেপিকে দোষারোপ করে বলেন, এই দলটা পোশাক, জাত, খাদ্যাভ্যাস নিয়ে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করছে। সমাজকে বিভক্ত করছে।

গত বছর জানুয়ারি মাসে কর্নাটকে হিজাব বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। উদিপি জেলার এক সরকারি প্রাক–বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছয় মুসলিম শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের হিজাব পরে স্কুলে ঢুকতে বারণ করেছে। সেই শিক্ষার্থীরা এই নির্দেশের প্রতিবাদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে বিক্ষোভ দেখান।

সেই বিক্ষোভের প্রতিবাদে হিন্দু শিক্ষার্থীরা পাল্টা বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করেন। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তারা গেরুয়া চাদর ও ওড়না জড়িয়ে ক্লাসে আসতে থাকেন। উদিপি জেলার বাইরেও ক্রমে বিষয়টি ছড়িয়ে যায়। রাজ্যের প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা। কোনো কোনো জায়গায় দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষও বাধে।
শিবমোগা জেলায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ১৪৪ ধারাও জারি করা হয়।

হিজাব বিতর্ক শেষ পর্যন্ত আদালত পর্যন্ত গড়ায়। গত বছর ১৫ মার্চ সেই মামলায় কর্নাটক হাইকোর্ট জানান, ইসলাম ধর্মে হিজাব পরা আবশ্যক নয়। পরে হিজাবসংক্রান্ত বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল, হাইকোর্ট তা বহাল রাখেন। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে—যেখানে ইউনিফর্ম চালু রয়েছে, সেখানে তা মানতে হবে। হিজাব পরে স্কুল চত্বরে গেলেও শ্রেণিকক্ষে তা পরা চলবে না।

কর্নাটক হাইকোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করে শিক্ষার্থীরা সুপ্রিমকোর্টে যায়। ডিভিশন বেঞ্চে দুই বিচারপতি বিপরীত রায় দেন। আবেদনকারীদের তারা বলেন, বিষয়টি বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানোর জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আরজি জানাতে।

কর্নাটকসহ বিভিন্ন রাজ্যে শুধু হিজাবই নয়, আজানের মাইক বন্ধ, হালাল মাংস বেচাকেনা নিয়েও নানান নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ও হচ্ছে।

- Advertisement -spot_img

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর