চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় রসায়ন বিভাগের সেই অধ্যাপককে স্থায়ীভাবে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটে সিন্ডিকেট ৫৪৮তম (জরুরি) সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রাত ১০টায় অপসারণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ আবুল মনছুর ও মোহাম্মদ আলী। তাঁরা দুজনেই বলেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সুপারিশে ওই অধ্যাপককে অপসারণ করা হয়েছে।
গত ৩১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতারকে চিঠি দিয়ে ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ দেন এক ছাত্রী। চিঠিতে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, ‘তিনি অভিযুক্ত অধ্যাপকের তত্ত্বাবধানে স্নাতকোত্তরের থিসিস করছেন। থিসিস শুরু হওয়ার পর থেকেই অধ্যাপক তাঁকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করছেন। পরীক্ষাগারে (ল্যাব) ও নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে একাধিকবার ওই অধ্যাপক তাঁর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়া, জড়িয়ে ধরাসহ নানাভাবে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন করে আসছেন।
অভিযোগে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, ৬ জানুয়ারি গবেষণাগারে তাঁকে একা পেয়ে ওই শিক্ষক যৌন নিপীড়ন করেন। এরপর ১৩ জানুয়ারি নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই দিন থেকেই ক্লাস বর্জনের কর্মসূচি পালন করছেন রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশ ও ছাত্র ইউনিয়নসহ বাম ধারার সাত সংগঠনের নেতা–কর্মীরাও সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন। এ ঘটনায় ১ ফেব্রুয়ারি ওই অধ্যাপককে সাময়িক অপসারণ করেছে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন কেন্দ্রের অভিযোগ কমিটিও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে।
পরে গত মঙ্গলবার এ কমিটি যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রে প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর এ কমিটি শুক্রবার সকালে সভা করে। সভা শেষে জরুরি সিন্ডিকেট ডাকেন উপাচার্য শিরীণ আখতার। সিন্ডিকেট এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।
জানতে চাইলে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সদস্য সচিব অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, যাচাই–বাছাই করে সিন্ডিকেটে সুপারিশসহ তাঁরা প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন। ধর্ষণচেষ্টার ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।