Saturday, December 21, 2024

বঙ্গভবন ছেড়ে যেখানে উঠবেন আবদুল হামিদ

টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনের পর বঙ্গভবন ছাড়তে চলেছেন আবদুল হামিদ। আজ ২৩ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শেষ হচ্ছে তাঁর কর্মকালীন মেয়াদকাল। আগামীকাল ২৪ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন রাষ্ট্রপতি পাবে বাংলাদেশ।

বিদায়ী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সকাল ১১টায় নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে তাঁর কার্যালয়ের দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনের পর বঙ্গভবন ছাড়ছেন আবদুল হামিদ।

নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। শপথ অনুষ্ঠানে বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যসহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত থাকবেন।

নিয়ম অনুযায়ী শপথ অনুষ্ঠানের পর নতুন রাষ্ট্রপতিকে চেয়ারে বসিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবেন বিদায়ী রাষ্ট্রপতি। এসময় তিনি রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নতুন রাষ্ট্রপতিকে পরিচয় করিয়ে দেবেন।

এরপর ক্রেডেনশিয়াল গ্রাউন্ডে তাকে গার্ড অব অনার এবং প্রধান ফটকে স্যালুট গার্ড দেবে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড রেজিমেন্ট। বিদায়ী রাষ্ট্রপতিকে বহন করবে সাজানো একটি গাড়ি।

বঙ্গভবনের সব কর্মকর্তারা দুই দলে ভাগ হয়ে গাড়ির সামনে দড়ি ধরে দাঁড়াবেন। তারপর গাড়ি সামনে অগ্রসর হবে। এসময় বঙ্গভবনের ভেতরে সব কর্মকর্তা, কর্মচারী ও পিজিআর সদস্যরা ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে দেবেন। বঙ্গভবনকে বিদায় জানিয়ে একটি খোলা জিপে করে সেখান থেকে বের হবেন আবদুল হামিদ।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ২১ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৭ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এই পদে সপ্তদশ আর নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন অষ্টাদশ ব্যক্তি।

বঙ্গভবন ছাড়ার পর যেখানে উঠছেন

নতুন রাষ্ট্রপতিকে দায়িত্ব হস্তান্তরের পর বঙ্গভবন ছেড়ে আবদুল হামিদ উঠবেন রাজধানীর নিকুঞ্জে তার নিজের বাড়িতে। এরইমধ্যে আসবাবপত্রসহ সব সরঞ্জাম সেই বাসায় ওঠানো শুরু হয়েছে।

নতুন রাষ্ট্রপতির শপথ অনুষ্ঠানের পর বঙ্গভবনে বিদায় অনুষ্ঠানের শেষে আবদুল হামিদকে সর্বোচ্চ সম্মান ও রাষ্ট্রীয় প্রটোকল অনুযায়ী নিকুঞ্জের বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। এরইমধ্যে ওই এলাকায় ইতোমধ্যে নিরাপত্তা জোরদার আর বাইরের মানুষের প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের সন্তান আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল প্রথম দফায় দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। এরপর ২০১৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ২১তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

এর আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত মো. জিল্লুর রহমান বিদেশে চিকিৎসাধীন জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসেবে আবদুল হামিদ কিছুদিন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি এবং জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর বেশ কিছুদিন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী আবদুল হামিদ ১৯৭০ সালে ময়মনসিংহ-১৮ আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকা থেকে সাতবার আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এ সফল রাজনীতিবিদ।

অবসরে যেসব সুবিধা পাবেন

রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন শেষে বঙ্গভবন ছেড়ে অবসরে গেলেও আবদুল হামিদ আইন অনুযায়ী অবসর ভাতা, একজন মন্ত্রীর প্রাপ্য চিকিৎসাসুবিধার সমপরিমাণ চিকিৎসাসুবিধা চিকিৎসা-সুবিধাসহ অন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি সর্বশেষ যে মাসিক বেতন পেতেন, তার ৭৫ শতাংশ হারে তিনি আমৃত্যু মাসিক অবসর ভাতা পাবেন। আবার অবসর ভাতা পাওয়ার যোগ্য একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি অবসর ভাতার পরিবর্তে আনুতোষিকও (এককালীন অর্থ) নিতে পারেন।

অবসরে গিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি হিসেবে একজন ব্যক্তিগত সহকারী এবং একজন অ্যাটেনডেন্ট (সাহায্যকারী) পাবেন আবদুল হামিদ। একজন মন্ত্রীর প্রাপ্য চিকিৎসাসুবিধার সমপরিমাণ চিকিৎসাসুবিধা পাবেন।

এছাড়া আবাসস্থলে একটি টেলিফোন সংযোগ, সাবেক রাষ্ট্রপতি হিসেবে একটি কূটনৈতিক পাসপোর্ট, দেশের ভেতর ভ্রমণকালে সরকারি সার্কিট হাউস বা রেস্টহাউসে বিনা ভাড়ায় থাকার সুবিধা পাবেন। এছাড়া সরকারের নির্ধারণ করে দেওয়া দাপ্তরিক ব্যয়ও পাবেন তিনি।

- Advertisement -spot_img

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর