নানা বিতর্কের মধ্যে দিয়ে শুক্রবার (৫ মে) হিন্দি, তামিল, তেলেগু ও মালয়ালাম ভাষায় মুক্তি পেয়েছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। বাঙালি নির্মাতা সুদীপ্ত সেন পরিচালিত এই সিনেমাটি ‘ধর্মীয় উস্কানি’র অভিযোগে নিষিদ্ধের দাবিও উঠেছিল। তবে সবকিছু পেরিয়ে বক্স অফিসে দুর্দান্ত ব্যবসা করে চলেছে সিনেমাটি।
এ নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি লাইভের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রথম দিনের ভালো ব্যবসার পর দ্বিতীয় দিনের প্রাথমিক আয়ের পরিসংখ্যান মিলেছে। তাতেই পরিষ্কার দ্বিতীয় দিনে আয় বৃদ্ধি হয়েছে বিপুল পরিমাণে।
বিতর্কের ঝড় পেরিয়ে প্রথম দিনে এই সিনেমাটি ৮ কোটি ৩ লাখ রুপি ব্যবসা করে। এখন প্রাথমিকভাবে পরিসংখ্যান বলছে, দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ শনিবার সিনেমাটি সাড়ে ১২ কোটি রুপির ব্যবসা করেছে। অর্থাৎ প্রথম দুদিনের ব্যবসার পরিমাণ মোট ২ কোটি ৫৩ লাখ রুপি।
এদিকে ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, জোর করে কেরালার হিন্দি ও খ্রিস্টান মেয়েদের ইসলামে ধর্মান্তকরণ এবং আইসিসে যোগদান করানোর প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই সিনেমাটি। বলা হচ্ছে, ২০১৬ সালে উত্তর কেরালার ২১ জন মেয়ের গায়েব হওয়ার বাস্তব ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র গল্প সাজিয়েছেন পরিচালক সুদীপ্ত সেন।
এই সিনেমার ট্রেইলারে তথ্যগত ভুলভ্রান্তি রয়েছে দাবি, কেরালার একাধিক রাজনৈতিক দলের। কেরালা কীভাবে সন্ত্রাসবাদীদের ‘সেফ হেভেন’ হয়ে উঠেছে তা উঠে এসেছে এই সিনেমায়। যা ঘিরেই বিতর্ক।
মুক্তির আগে সিনেমাটি নিয়ে কংগ্রেস নেতা ভি ডি সাথীসান বলেছিলেন, ‘এই ছবি জুড়ে রয়েছে মিথ্যাচার। টিজারে দেখানো হয়েছে, কেরালা থেকে ৩২ হাজার নারীকে ধর্মান্তরিত করে নিয়ে তাদের সিরিয়া ও আফগানিস্তানে আইএসআইয়ের প্রশিক্ষণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা পুরোপুরিভাবে আমাদের রাজ্য ও একটি ধর্মের মানুষের অপমান, আর এর পেছনে রয়েছে সঙ্ঘীদের হাত।’
শুধু তাই নয় সিনেমাটি কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের অভিযোগ —কেরালাকে সাম্প্রদায়িকতার বিষাক্ত বীজ হিসেবে দেখিয়ে ধর্ম নিরপেক্ষ পরিবেশ নষ্ট করে দিতে চাইছে ‘সংঘ পরিবার’ (হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠনের জোট)।
এদিকে এবিপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইতোমধ্যে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান এই সিনেমাটিকে তার রাজ্যে করমুক্ত ঘোষণা করেছেন।
অনেকেই যেমন সিনেমাটিকে ‘প্রোপাগান্ডা ফিল্ম’ বলে দেখছেন, তেমনই অপর একাংশ এটিকে ‘দুর্দান্ত’ বলছেন।