আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ফ্যামিলি কার্ডধারী দেশের ১ কোটি পরিবার ৩০ টাকা কেজি দরে ১০ কেজি করে চাল কেনার সুযোগ পাবেন।
সম্প্রতি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে এ বরাদ্দ দিয়ে সব জেলা প্রশাসককে (ডিসি) চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ জন্য ১ লাখ ৫১৫ টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ফ্যামিলি কর্মসূচির আওতায় সারাদেশের ৬৪ জেলায় ৪৯২ উপজেলার জন্য ৮৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৪৯টি এবং ক, খ ও গ ক্যাটাগরির ৩২৯টি পৌরসভার জন্য ১২ লাখ ৫৩ হাজার ৮৫১টিসহ সর্বমোট ১ কোটি ৫১ হাজার ৫০০টি ফ্যামিলি কার্ডের বিপরীতে কার্ডপ্রতি ১০ কেজি হারে এক লাখ ৫১৫ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল শর্তাবলি অনুসরণ করে বিভাজন অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হল।
বরাদ্দ দেওয়া ভিজিএফ চাল আগামী ২০ জুনের মধ্যে উত্তোলনসহ বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে।
বর্তমানে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে তিনটি পণ্য কেনার সুযোগ পাচ্ছে ১ কোটি পরিবার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি বিপণনকারী সংস্থা টিসিবি কম দামে সয়াবিন তেল, ডাল ও চিনি বিক্রি করছে উপকারভোগীদের কাছে। সেই পণ্য তালিকায় নতুন করে যুক্ত হচ্ছে চাল।
খাদ্য সচিব ইসমাইল হোসেন বলেন, বর্তমানে টিসিবির মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষকে সহায়তার উদ্দেশ্যে কিছু পণ্য সাশ্রয়ী দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ওই তালিকায় চাল যুক্ত করা হচ্ছে। ফ্যামিলি কার্ডধারীরা এ সুবিধা পাবেন।
বরাদ্দের শর্তে বলা হয়, এসব ভিজিএফ বরাদ্দের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা স্থানীয় সংসদ সদস্যদের অবহিত করবেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৬ সালের তথ্য অনুযায়ী ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডভিত্তিক বরাদ্দ করা ভিজিএফ কার্ড সংখ্যা পুনর্বিভাজন করে তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। www.bbs.gov.bd ওয়েবসাইটে লগইন করে জনসংখ্যার তথ্য পাওয়া যাবে।
দুস্থ, অতিদরিদ্র ব্যক্তি ও পরিবারকে এ সহায়তা দিতে হবে। তবে সাম্প্রতিক বন্যাক্রান্ত ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দুস্থ ও অতিদরিদ্রকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
এ ছাড়া নিচের শর্তাবলির মধ্যে কমপক্ষে চারটি শর্ত পূরণ করে এমন ব্যক্তি ও পরিবার দুঃস্থ বা অতিদরিদ্র বলে গণ্য হবে। এর মধ্যে রয়েছে পরিবারের মালিকানায় কোনো জমি নেই বা ভিটাবাড়ি ছাড়া কোনো জমি নেই, যে পরিবার দিনমজুরির আয়ের ওপর নির্ভরশীল, যে পরিবার নারী শ্রমিকের আয় বা ভিক্ষাবৃত্তির ওপর নির্ভরশীল, যে পরিবারের উপার্জনক্ষম পূর্ণবয়স্ক কোনো পুরুষ সদস্য নেই, যে পরিবারে স্কুলগামী শিশুকে উপার্জনের জন্য কাজ করতে হয়, যে পরিবারে উপার্জনশীল কোনো ব্যক্তি নেই, যে পরিবারের প্রধান স্বামী পরিত্যক্তা, বিচ্ছিন্ন বা তালাকপ্রাপ্তা নারী, যে পরিবারের প্রধান অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা, যে পরিবারের প্রধান অসচ্ছল বা অক্ষম প্রতিবন্ধী, যে পরিবার কোনো ক্ষুদ্রঋণ পায়নি, যে পরিবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে চরম খাদ্য ও অর্থ সংকটে পড়েছে এবং যে পরিবারের সদস্যরা বছরের অধিকাংশ সময় দু’বেলা খাবার পায় না।
এদিকে সরকারের চলমান খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় গ্রাম পর্যায়ে ‘অতি দরিদ্র’ মানুষের জন্য ১৫ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি শুরু হচ্ছে ১ সেপ্টেম্বর। তা চলবে নভেম্বর পর্যন্ত। সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫০ লাখ উপকারভোগীর মাঝে ভর্তুকি মূল্যে এ চাল বিক্রি করা হবে।