প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ক্ষমতার লোভে মানুষের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় থাকব, সেই বাপের মেয়ে আমি না।’ তিনি বলেন, ‘২০০১ সালে আমার ওপর তখন প্রচণ্ড চাপ ছিল গ্যাস বিক্রি করতে হবে, কিন্তু আমি রাজি হইনি।’
আজ শুক্রবার (২৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। দলের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা গ্যাস বিক্রি করতে চাইনি বলে ক্ষমতায় ফিরতে পারিনি। তখন মুচলেকা দিয়েছিল খালেদা জিয়া। মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের সম্পদ বেচবে, লুটপাট করবে, এটা এই দেশের মানুষ মেনে নেয়নি। ১৯৯৬ সালে ভোট চুরির কারণে জনগণ খালেদা জিয়াকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করেছে। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে জনগণ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাই হয়েছিল মানুষের অধিকারের জন্য। এদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে আওয়ামী লীগ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনকে অনেক কথা বলে। আমরা তাদের একটু স্মরণ করিয়ে দিতে চাই—বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে কোথায় ছিল বাংলাদেশ।’ এ সময় বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার চিত্র তুলে ধরেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, ‘একসময় বলা হতো নুন-ভাত, এরপর ডাল-ভাত। এখন কিন্তু মানুষ মাংস পাচ্ছে না, সেটাই কথা হচ্ছে। আমি জানি, মাংসের দাম অনেক বেড়েছে। তবে, মানুষ যে মাংস খাওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে, সেটা তো সত্য।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির আমল থেকে আমরা মাথাপিছু আয় পাঁচ গুণ বাড়িয়েছি। বাজেট বিএনপির সময় থেকে ১০ গুণ বাড়িয়েছি। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ১৩ গুণ বাড়িয়েছি। রিজার্ভ বাড়িয়েছি প্রায় ৩০ গুণ। রপ্তানি আয় পাঁচ গুণ বাড়িয়েছি। প্রবাসী আয় ছয় গুণ বাড়িয়েছি।’
করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি কিছুটা হোচট খায় জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আজ সারা বিশ্বেই মূল্যস্ফীতি। আমরা মানুষের কষ্ট লাঘবের চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
বিদ্যুৎ উৎপাদনের চিত্র তুলে ধরে বিএনপির আমলের সঙ্গে তুলনা করেন প্রধানমন্ত্রী। কয়লার কারণে কয়েক দিন লোডশেডিং দিতে হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কয়লা চলে এসেছে, আশা করি এখন আর বিদ্যুতের সমস্যা থাকবে না।’
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, সদস্য বেগম আক্তার জাহান, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান প্রমুখ।