Saturday, November 23, 2024

মাছের তেলে অনেক গুণ

বাঙালি বাড়িতে প্রায় নিত্য অতিথি মাছ। অনেকেই খাওয়ার পাতে মাছের উপরের তৈলাক্ত অংশটা ফেলে দিয়ে মাছ খান। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, মাছের ওই তেলেই বেশি গুণ।

কেন খাবেন মাছের তেল?

ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের ভাল উৎস মাছের তেল। রুই-কাতলা-পাবদা জাতীয় মাছের তেল রোজ খাওয়াই যায়। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ইমিউন সিস্টেম ভাল রাখে। হৃদ্‌রোগেও উপকারী। মাছের তেল রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। এই তেলের ক্যালশিয়াম হাড় শক্ত করে। ভিটামিন এ থাকে, যা চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। তাই রোজ একশো গ্রাম মাছের টুকরোর সঙ্গে যেটুকু তেল থাকে, তা খাওয়াই যায়। তবে মাছের তেলের বড়া খাওয়া যাবে না। মাছের তেলের বড়া ভাজা হয় তেলেই। ফলে তেল গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে যায়। বরং চচ্চড়িতে অল্প মাছের তেল মিশিয়ে নিলে অতটা অসুবিধে হয় না।

বেশির ভাগ হেল্থ অর্গানাইজ়েশন প্রত্যেক সপ্তাহে অন্তত দু’বার ফ্যাটি ফিশ খাওয়ার পরামর্শ দেয়। আসলে ইপিএ আর ডিএইচএ-র কম্বিনেশনে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি হয়। আর এই দুটো উপাদান মস্তিষ্কের গঠনে সহায়ক। তাই গর্ভবতী মায়েদের ফিশ অয়েল বা মাছের তেল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ওমেগা সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিড ভাল হলেও তা শরীরে প্রদাহ বাড়ায়। কিন্তু ওমেগা থ্রি এই প্রদাহ বা ইনফ্ল্যামেশন নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে বিভিন্ন রোগবালাইয়ে কোষে প্রদাহ দেখা দিলে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড দেওয়া হয়। জয়েন্ট পেন বা গাঁটের ব্যথায় বা নিউরোজেনেটিক ডিসঅর্ডারে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড খুব ভাল। তবে পাবদা-ট্যাংরা জাতীয় মাছের চেয়ে স্যামনের মতো সামুদ্রিক মাছে ওমেগা থ্রির পরিমাণ বেশি পাওয়া যায়।

ফিশ অয়েল কতটা স্বাস্থ্যকর?

ফিশ অয়েল ক্যাপসুল না খেয়ে মাছের তেল বা ফিশ অয়েলই ভাল । বাজারচলতি ফিশ অয়েল ক্যাপসুলে ভিটামিন এ আলাদা করে দেওয়া থাকে। অতিরিক্ত ভিটামিনস শরীরের হাইপারটক্সিসিটি তৈরি করে। তাই ক্যাপসুলের বদলে রোজকার মাছের তেল বা ফিশ অয়েলে ভরসা রাখাই ভাল। তবে প্রয়োজনে ফিশ অয়েল ক্যাপসুল নিতে হলে পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ এ ক্ষেত্রে ঠিক পরিমাণ খুব জরুরি।

কী কী বিষয়ে সতর্ক হবেন?

মূলত ফিশ অয়েল বা ভিটামিনস শরীরে কতটা দরকার, তা নির্ধারিত হয় ইওরোপীয় দেশে। কিন্তু আমাদের দেশের খাদ্যাভ্যাস স্থানবিশেষে আলাদা। তাই নিজের জায়গা, খাদ্যাভ্যাস অনুযায়ী ফিশ অয়েল গ্রহণের পরিমাণ ঠিক করতে হবে। ওমেগা থ্রি ব্লাড গ্লুকোজ় লেভেল বাড়িয়ে দেয়। অতিরিক্ত ফিশ অয়েলে ডায়েরিয়ার ভয় থাকে। কোনও অসুখে সোডিয়ামের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে হলেও মাছের তেল খাওয়া কমাতে হবে। তাই কতটা তেল খাচ্ছেন, তার মাপ ঠিক করাটা জরুরি।

- Advertisement -spot_img

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর