প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বৈধ উপায়ে বাংলাদেশি শ্রমিকদের অভিবাসনের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছেন। রোমে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পালাজ্জো চিগিতে এ বৈঠক হয়েছে। অনথিভুক্ত বাংলাদেশি প্রবাসী, দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে এতে আলোচনা হয়েছে।
ইতালি সফরের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যান ইতালির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পালাজ্জো চিগিতে। সেখানে তাকে স্বাগত জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাকে দেয়া হয় লাল গালিচা সংবর্ধনা।
এরপর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তারা। এ সময় সংস্কৃতি বিনিময় এবং জ্বালানি খাতে সহায়তা নিয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি জানান, নতুন কর্মী বাংলাদেশ থেকে নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে ইতালি।
ইতালির প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের কর্মীরা এখানে খুব ভালো কাজ করছে। তাদের যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্যতা আছে। তবে আমি অবৈধ শ্রমিক চাই না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা বাংলাদেশের জন্য বৈধ উপায়ে জনশক্তি পাঠানোর দরজা খুলে দিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নথিভুক্ত ও অনথিভুক্ত উভয় ধরনের বাংলাদেশি দুই দেশের কল্যাণে কাজ করছেন। তবে বাংলাদেশও অবৈধ অভিবাসনকে নিরুৎসাহিত করে। বাংলাদেশের পক্ষে অন্য দেশ থেকে অবৈধ পথে ইতালিতে আসা অভিবাসী বাংলাদেশিদের আটকাতে ইতালিকে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ৩৯টি হাই-টেক পার্কের উন্নয়ন করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা ইতালিকে বিশেষ অঞ্চল ও পার্কে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ইতালি চাইলে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ব্যবস্থা করা হবে।
জর্জিয়া মেলোনি বলেন, ইতালি ও বাংলাদেশ যৌথ সহযোগিতার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদার করতে পারে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে চামড়াজাত পণ্য আমদানি প্রক্রিয়া সহজ করতে ইতালির প্রতি আহ্বান জানান। ইতালির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহ দেখানো হয়। শেখ হাসিনা ইতালির প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা গ্রহণ করে বলেন, অবশ্যই তিনি বাংলাদেশ সফর করবেন।
দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতার বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন এবং ইতালির উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্তোনিও তাজানি জ্বালানি সহযোগিতা সমঝোতা স্মারক এবং পাঁচ বছরের সাংস্কৃতিক সহযোগিতা সমঝোতা স্মারক বিনিময় করেন।
ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক কাজী রাসেল পারভেজ জানান, জ্বালানি খাতে বাংলাদেশকে বহুমাত্রিক সহায়তা দেবে ইতালি।
বাংলাদেশের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতেও আগ্রহ দেখিয়েছে ইতালি।