Friday, November 22, 2024

নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি দুর্নীতিবাজদের সম্পদও বাজেয়াপ্ত করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র

কোনো দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পাশাপাশি দুর্নীতিবাজদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া অংশীদার দেশগুলোকে এ বিষয়ে তথ্য দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র, যাতে ওইসব দেশ এ ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) এসব কথা বলেন।

ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, বরং তার মিত্র দেশগুলোকে এসব শাস্তিমূলক পদক্ষেপের ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা হবে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে দুর্নীতি এবং বিদেশে টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নতুন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেবে কি না, এ সংক্রান্ত এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ওই মন্তব্য করেন মুখপাত্র মিলার।

ব্রিফিংয়ে এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলমসহ ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতি ও বিদেশে অর্থ পাচার নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিভাগের সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সফর করেছেন। সফরকালে তিনি সরকারের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তার সফরের সময়ে এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলমের বিদেশে অর্থ পাচার নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার। ওই রিপোর্টে বলা হয়, সাইফুল আলম, যিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের একজন সহযোগী। তিনি বিদেশে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার পাচার করে নিজের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। স্টেট ওয়াচ ডটনেট ও ওসিসিআরপিও তাদের রিপোর্টে একইভাবে বাংলাদেশে অন্যদের ব্যাপক দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের বিষয়টি তুলে ধরেছে। এছাড়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তার সঙ্গে বৈঠককালে নেফিউ ইঙ্গিত দিয়েছেন—যুক্তরাষ্ট্র দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে—যারা দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সঙ্গে নিজেদের জড়িয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র কি তাদের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে?

জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘এর আগে অন্য একটি দেশের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আমি যেমনটা বলেছি— আমরা কখনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগে বিষয়টি নিয়ে কথা বলি না। সাধারণ অর্থে এ কথাটা বলা হয়ে থাকে, নিষেধাজ্ঞাকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এর বাইরে আমাদের আরও কিছু হাতিয়ার রয়েছে, যেমন—সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা, মিত্র দেশগুলোকে এ বিষয়ে আমরা তথ্য দিয়ে থাকি, যাতে করে তারা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।’

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারকে বলব, তারা যেন নিজেরা দেশের দুর্নীতিবাজদের নির্মূল করে। আর সেটা যেন হয় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পন্থা অবলম্বন করে।’

সোমবার (৭ আগস্ট) ঢাকাস্থ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিভাগের সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউ। বৈঠকের পর ১১ জনের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আসছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বৈঠকে রিচার্ড নেফিউ বলেছেন, স্যাংশনস ইজ অ্যা টুল (নিষেধাজ্ঞা একটি হাতিয়ার)।’

এদিকে, ম্যাথিউ মিলার ব্রিফিংয়ে আবারও বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। তার কাছে ওই সাংবাদিক জানতে চান, বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দাবিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার কি কোনো মন্তব্য আছে, তারা আসলে সেখানে কি করছেন? বাংলাদেশের পরিস্থিতি বাস্তবেই অনেক খারাপ। তা সত্ত্বেও এসব মানুষ বাংলাদেশে গণতন্ত্রের দাবি জানাচ্ছেন।

ওই সাংবাদিকের এ প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘বহুবার আমি এ বিষয়ে পরিষ্কার করেছি। এই মঞ্চ থেকে অনেকবার বলেছি, আমরা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থন করি। প্রকাশ্যে আমরা এ কথা বলেছি। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনাকালে আমরা এটা পরিষ্কার করেছি এবং তা করে যাব। এটা আমাদের নীতি।’

- Advertisement -spot_img

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর