দেশের বাজারে ডিমের দাম বেড়েই চলেছে। ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে রাজধানীসহ সারা দেশে অভিযান চালাচ্ছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানে বেশিরভাগ জায়গায় ডিমের ক্রয়-বিক্রয়ের রসিদ পাওয়া যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় পাকা রসিদ না পাওয়া গেলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
আজ সোমবার (১৪ আগস্ট) ডিমের উৎপাদক, ব্যবসায়ীদের নিয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের সভাকক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘এতদিন আমাদের কাছে ডিম উৎপাদনের সঠিক খরচ ছিল না। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে আমরা সেটি জেনেছি। খুচরায় কত দাম হবে সেটিও বলা হয়েছে। সুতরাং, ডিমের দাম ১২ টাকার বেশি নিলে তাদের বিরুদ্ধে শুধু জরিমানা নয়, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
ভোক্তা অধিদপ্তরের ডিজি বলেন, ‘ডিম এমন একটা পণ্য যা সারা দেশের সব শ্রেণির মানুষের ওপরেই প্রভাব ফেলে। গত বছর ডিমের বাজারে অস্থিরতার সময় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, রসিদ ছাড়া ডিম ক্রয়-বিক্রয় না করতে। কিন্তু, ব্যবসায়ীরা সেটা মানে নাই। এবারও আমরা বাজার মনিটরিং এ যাওয়ার পর একই অবস্থা দেখতে পাই। এবার আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
এদিকে, সভায় উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীরা ভোক্তা অধিদপ্তরের কাছে জানান, সাড়ে দশ টাকা উৎপাদন খরচ হলে সেটি খুচরায় ১২ টাকা বিক্রিতে সমস্যা তৈরি হবে। খুচরা পর্যায়ে বিক্রিতে যেতে যেতে চার-পাঁচটি হাত বদল হয়, কে কত লাভ করবে সেটি বলে দেওয়া উচিত।
পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ‘ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ১০ টাকা ৮৫ পয়সা। সুতরাং, খুচরা মূল্য ১৩ টাকা হওয়া উচিত।’ তেজগাঁও বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি হাজী মো. আমান উল্লাহ বলেন, ‘ডিমের দাম ১৩ টাকার কমে নামলে সেটি খামারিদের লোকসানে ফেলবে।’
অনুষ্ঠানে ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কাজী, প্যারাগনের মতো বড় প্রতিষ্ঠান সাড়ে ১০ টাকায় ডিম উৎপাদন করে সর্বোচ্চ ১১.৪০ টাকায় বিক্রি করেছে। আমরা কি যৌক্তিক উপায়ে ১০ শতাংশও লাভ করতে পারবো না?’ এর জবাবে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘কে কত লাভ করবে সেই আলোচনা করতে হলে উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীদের প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে করতে হবে। সেই সুযোগ রয়েছে। এখন আমরা ১২ টাকা ধরেই বাজারে অভিযান পরিচালনা করব।’
সভায় এক প্রশ্নের জবাবে ভোক্তার মহাপরিচালক বলেন, ‘দেশে ডিমের চাহিদা চার কোটি পিস। যেখানে প্রতি পিসে দুই টাকা হলে প্রতিদিন আট কোটি টাকা বাড়তি নেওয়া হয়েছে। অস্থিরতার সময়ে একেকটি ডিম ১৪-১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।’