Monday, December 2, 2024

শ্বশুরবাড়িতে কীভাবে চলবেন, জানুন সম্পর্ক ভালো রাখার উপায়

বাঙালি রীতি ও সংস্কৃতি অনুযায়ী বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে নতুন জীবন শুরু করতে হয় নববধূকে।শ্বশুরবাড়িই হয়ে যায় তার আপন ঠিকানা। কিন্তু হঠাৎ করে চিরচেনা পরিবার, সদস্য ও পরিবেশ ছেড়ে ভিন্ন এক পরিবেশে নতুন মানুষদের সঙ্গে চলতে গিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় নববধূকে। নিজেকে মানিয়ে নেয়া, নতুন পরিবারে কার কেমন পছন্দ, কে কোন ধরনের মানুষ―সব অচেনা হওয়ায় কিছুটা তো হিমশিম খেতেই হয়।

এছাড়া বাবার বাড়ি ছেড়ে স্বামীর পরিবারে এসে শুরু করতে হয় সংসার জীবন। এখানে নিজেকেই সব গুছিয়ে নিতে হয়, করতে হয় নতুন নতুন পরিকল্পনা। আর এই অচেনা পরিবেশ ও পরিবারে একসঙ্গে এতসব দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে ভুল হলেই অনেক সময় শ্বশুরবাড়ির নানা কথা শুনতে হয়। এসব শুধু নববধূর ক্ষেত্রেই যে হয়, তা নয়। কখনো কখনো নতুন জামাইকেও শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে সমস্যার শিকার হতে হয়। এমনটাও দেখা যায় সম্পর্কের টানাপোড়েনেরও সৃষ্টি হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া শ্বশুরবাড়িতে চলাফেরা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।

সম্মান ও সীমানা: শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরির প্রথম এবং মৌলিক নীতি হচ্ছে সম্মান। শ্বশুরবাড়ির মানুষদের সঙ্গে সৌজন্য এবং বিবেচনার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন। বড়দের সঙ্গে সম্মান এবং ছোটদের সঙ্গে স্নেহমূলক ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনের বেশি কথা না বলাই উত্তম হবে। কেননা, অনেক সময় কথার অর্থ ভিন্ন হয়ে যায়, এ কারণে কিছু বললে সেটি স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে বলুন। প্রয়োজনে জীবনসঙ্গীর সঙ্গে পরিবারের সদস্য সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।

নিজের সম্পর্কে জানিয়ে রাখা: শুরুতেই নিজেকে আদর্শ হিসেবে উপস্থাপনের জন্য জোর চেষ্টা চালাবেন না। এতে পরবর্তীতে কিঞ্চিৎ এলোমেলো হলে সমস্যায় পড়বেন। এ জন্য নিজের স্বাভাবিক জীবনের মতো থাকার চেষ্টা করুন। স্বামীর সহায়তা নিন। আপনার পছন্দ-অপছন্দ জানিয়ে রাখুন তাকে। হয়তো আপনি অফিস শেষে বাসায় ফিরে বা সন্ধ্যায় চা বানাতে অভ্যস্ত নয়। কিন্তু শ্বশুবাড়িতে তারা বলল আর আপনি বানালেন। একসময় এটি নিয়মিত রুটিনে তৈরি হলো আর আপনি কখনো না করলেন, তখন বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা হবে। এ জন্য বলে রাখুন, আপনি হঠাৎ কিংবা বিশেষ কিছু দিনে চা বানিয়ে থাকেন। আর আজকের দিনটি তারই অংশ বিশেষ।

যোগাযোগ: শ্বশুরবাড়িসহ যেকোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রেই যোগাযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলুন। তারা কি বলতে চায় সেটি মনোযোগ সহকারে ভালোভাবে শুনুন এবং নিজেকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করুন। কোনো সমস্যা হলে, তা শান্তভাবে সমাধান করুন। যদি বিরোধ দেখা দেয়, তাহলে উত্তেজিত না হয়ে মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে পারেন। সবার সঙ্গে যোগাযোগ শক্তিশালী করতে সঙ্গীর সহায়তা নিন। আপনার সঙ্গীই হতে পারে মূল্যবান মধ্যস্থতাকারী।

সহানুভূতি ও বোঝার চেষ্টা: শ্বশুরবাড়ির সব সদস্য সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করুন। আপনি যেমন নিজস্বতা বজায় রাখেন, তারাও সেটি করে। তাদের মূল্যবোধ, ঐতিহ্য ও লাইফস্টাইল সম্পর্কে জানুন। সেসবের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন। এতে ক্রমে নতুন লাইফস্টাইলে যেমন অভ্যস্ত হবেন, তেমনি পরিবারের সবার সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা আসবে।

সদস্যদের নিজের মনে করা: নিজ জীবনে শ্বশুরবাড়ির মানুষদের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করুন। তাদের উপস্থিতিকে মূল্যবান মনে করতে হবে। যেকোনো কাজে প্রয়োজনে তাদের সহায়তা নিন। এতে আপনার সফলতায় তারা জড়িত হবে এবং আপনার প্রতি ইতিবাচক ধারণা হবে তাদের।

তুলনা ও বিচার করা যাবে না: নিজের পরিবারের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির তুলনা করা ঠিক নয়। এতে দুই পরিবারের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হতে পারে। এ জন্য তুলনা না করে বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। বরং সংসারে ভালো কাজে এবং সফলতায় তাদের অবদান ও ইতিবাচক দিকগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন।

- Advertisement -spot_img

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর