Thursday, April 25, 2024

কক্সবাজারে উদ্ধার হওয়া মৃতদেহগুলোর পরিচয় মিলেছে

কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলে টেনে আনা ডুবন্ত সেই ট্রলার থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ১০ জনের পরিচয় এখনও শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। তবে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলোর পরিচয় শনাক্ত করেছেন। এদের ১০ জনই জেলে। তারা হলেন- মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার রফিক মিয়ার ছেলে সামশুল আলম (২৩), শাপলাপুর ইউনিয়নের মিটাছড়ি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৮), জাফর আলমের ছেলে সওকত উল্লাহ (১৮), মুসা আলীর ছেলে ওসমাণ গনি (১৭), সাহাব মিয়ার ছেলে সাইফুল্লাহ (২৩), মোহাম্মদ আলীর ছেলে পারভেজ মোশাররফ (১৪), মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে নুরুল কবির (২৮), চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কবির হোসাইনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৪), শাহ আলমের ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহান (৩৫) ও চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা এলাকার জসিম উদ্দীনের ছেলে তারেক জিয়া (২৫)।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক তাওহিদুল আনোয়ার সমকালকে জানান, ঘটনার পরপরই রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নামে পিবিআইয়ের একটি দল। তবে তারা এখনও মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক লোকজন জানান, ৭ এপ্রিল রাতে সামশুল আলমের মালিকানাধীন একটি ফিশিং ট্রলার ১৯ জন জেলে নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে নেমেছিল। ট্রলারে ছিলেন ট্রলারমালিক সামশুল আলম ও মাঝি মোহাম্মদ মুসাও। দুদিন পর জানা গেছে, ট্রলারটি সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে, সে ব্যাপারে এলাকায় নানা কথা শোনা যাচ্ছে।

এদিকে রোববার রাতে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে নিহত সামশুল আলমের (ট্রলার মালিক) পরিচয় শনাক্ত করেন তাঁর স্ত্রী রোকেয়া আক্তার। চেহারা বিকৃত হলেও পরনের পোশাক ধরে আরও ছয়টি মরদেহের পরিচয় স্বজনেরা শনাক্ত করেছেন মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম।

এর আগে রোববার সন্ধ্যায় একে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‌‌‘এতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ তাদের হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা ছিল, শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। আমাদের ধারণা, জলদস্যুরা গভীর সাগরে তাদের হত্যা করেছে। পরে ট্রলারে লাশ রেখে দরজা লাগিয়ে দেয়।’

পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘সবকটি মরদেহ বিকৃত হয়ে গেছে। এজন্য পরিচয় শনাক্ত করতে দেরি হচ্ছে। পরিচয় শনাক্তে সিআইডি ও পিবিআইয়ের ক্রাইম সিন টিমকে খবর দেওয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত পরিচয় শনাক্ত করতে পারব। একইসঙ্গে ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে পারব। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি আমরা।’

স্থানীয়রা জানান, গভীর সাগরের কুতুবদিয়া চ্যানেলে ফিশিং বোটটির কিছু অংশ ডুবে ছিল। পরে অপর একটি ট্রলার ওই ফিশিং বোটটিকে বিশেষ ব্যবস্থায় টেনে শনিবার সন্ধ্যায় নাজিরারটেকে নিয়ে আসে। ভাটার পর রোববার সকালে কোল্ড স্টোর দেখতে গিয়ে মানুষের হাত-পা দেখা যায়। তখনই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এরপর ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সহযোগিতায় মরদেহগুলো উদ্ধার শুরু হয়।

- Advertisement -spot_img

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর